মেসি-রোনালদোরা নিষিদ্ধ হবেন না, দাবি পেরেজের
ইউরোপিয়ান সুপার লিগে খেলা মানে জাতীয় দলের দরজা একেবারে বন্ধ। এমন হুঙ্কার দিয়েছেন উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন। অর্থাৎ ফিফা ও উয়েফা আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবেন না ‘বিদ্রোহী’ লিগে এখন পর্যন্ত যোগ দেওয়া ১২টি ক্লাবের ফুটবলাররা। তবে সুপার লিগ ও রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তা গায়ে না মেখে আশ্বস্ত করেছেন খেলোয়াড়দের।
সুপার লিগে যোগ দিয়েছে স্পেনের রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। ইংল্যান্ড থেকে রয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, আর্সেনাল, চেলসি ও টটেনহ্যাম হটস্পার। ইতালির তিন ক্লাব হলো জুভেন্টাস, এসি মিলান ও ইন্টার মিলান। লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোসহ বহু তারকা ফুটবলারদের ঠিকানা এই দলগুলো।
তবে ফুটবল বিশ্ব তোলপাড় করে দেওয়া সুপার লিগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে উয়েফা। ফিফার সঙ্গে সুর মিলিয়ে সোমবার সেফেরিন জানান, ‘এই লিগে অংশ নেওয়া খেলোয়াড়রা তাদের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারবে না।’
চলতি বছর মাঠে গড়াবে কোপা আমেরিকা ও ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। আগামী ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বও চালু হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। ফলে মেসি-রোনালদোরা নিষিদ্ধ হলে সংশ্লিষ্ট দেশের ফুটবল ফেডারেশন থেকে শুরু করে ভক্ত-সমর্থক, সবাই পড়বে বিপাকে। কিন্তু সুপার লিগের অন্যতম উদ্যোক্তা পেরেজ রয়েছেন নির্ভার। একই দিনে স্প্যানিশ টেলিভিশন শো এল চিরিঙ্গিতোকে তিনি বলেন, ‘উয়েফা বলেছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও জাতীয় দল থেকে খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করবে? চিন্তার কারণ নেই। এটা ঘটবে না।’
সুপার লিগে নাম লেখানো ক্লাবগুলোকে তাদের নিজ নিজ লিগ ও চলমান ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার কথাও বলেছে উয়েফা। এতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে খেলা না-ও হতে পারে রিয়াল, চেলসি ও ম্যান সিটির। তবে এটা করাও সম্ভব নয় বলে মত পেরেজের, ‘রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসিসহ সুপার লিগের অন্যান্য ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বা ঘরোয়া লিগ থেকে নিষিদ্ধ করা হবে না। আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত। এটা করা অসম্ভব।’
আগামী ২০২৪-২৫ মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে হবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ৩২ দলের পরিবর্তে অংশ নিবে ৩৬টি দল। উয়েফা কার্যনির্বাহী কমিটি এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে ৭৪ বছর বয়সী পেরেজের ভাষ্য, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন ফরম্যাট অর্থনৈতিকভাবে আত্মঘাতী। সুপার লিগ ছাড়া ২০২৪ সালের আগেই ফুটবল মারা পড়বে। বড় ও ছোট সব ক্লাবই মরবে।’
এই স্প্যানিশ ব্যবসায়ী পাল্টা হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘তারা (উয়েফা) বিশ্বাস করে যে, আমরা তাদের সম্পত্তি এবং তারা আমাদের যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু তারা ভুল। একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটাতে হবে।’
সুপার লিগের উদ্যোক্তাদের অনেকে ছিলেন উয়েফার গুরুত্বপূর্ণ পদে। তাদেরকে সাপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সেফেরিন। সেকারণে পেরেজ এক হাত নেন উয়েফা সভাপতিকেও, ‘এটা হাস্যকর যে, উয়েফা সভাপতি একটি বড় ইউরোপিয়ান ক্লাবের সভাপতিকে অপমান করতে পারেন। ফুটবলে এই ধরনের লোক আমাদের দরকার নেই। এটা অসম্মানজনক ও অগ্রহণযোগ্য।’
এই লিগ আয়োজনে ফুটবলপ্রেমীদের কথাও মাথায় রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পেরেজ, ‘এই পরিবর্তন ঘটানোর জন্য ভক্তদের কাছে আমরা দায়বদ্ধ ছিলাম।’
Comments