নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি ৬ গ্রামের ভরসা

প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ৫ হাজার মানুষের পারাপার
চরবগলা খালের ওপর বাঁশ এবং গাছ দিয়ে স্থানীয়দের নির্মিত সাঁকো। ছবি: সোহরাব হোসেন

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের চরবগলা খাল। প্রতিদিন এই খাল পার হয় ছয় গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। তবে, পারাপারে তাদের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত বাঁশের সাঁকোটির অবস্থাও হয়ে পড়েছে নড়বড়ে। সাঁকোটিতে দুই-তিনজন মানুষ উঠলেই দুলতে থাকে। ফলে, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই পার হতে হয় ছয় গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে।

স্থানীয়রা জানান, এক সময় মৌডুবি ইউনিয়নের হাফেজকান্দা, বাইলাবুনিয়া, বলিকান্দা, খাসমহল, ভূইয়াকান্দা ও চরবগলা এই ছয় গ্রামের মানুষ চরবগলা খাল নৌকার মাধ্যমে উপজেলা শহরে যাতায়াত করত। পরে গ্রামবাসী যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করতে কয়েক বছর আগে সেখানে নিজেদের অর্থায়নে চরবগলা খালের ওপর বাঁশ এবং গাছ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করেন। এতে, গ্রামবাসীদের তখনকার দুর্ভোগ কমলেও সাঁকোটি পুরনো ও নড়বড়ে হয়ে পড়ায় আবারও দুর্ভোগ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের সাঁকোটির পাটাতনে থাকা বাঁশ ও গাছের ডাল নড়বড়ে হয়ে গেছে। বাঁশ সরে কিছু স্থানে ফাঁকা হয়ে গেছে। এতে সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মানুষ পারাপারের সময় সাঁকোটি হেলতে-দুলতে থাকে। তারপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোটি ব্যবহার করছে।

খাসমহল গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘স্থানীয়দের চলাচলের জন্য চরবগলা খালের ওপর সরকারিভাবে একটি সেতু নির্মাণ করা দরকার। পুরনো ও জরাজীর্ণ এই সাঁকো দিয়ে এখন আর পারাপার হওয়া যায় না। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হয়। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, শিক্ষার্থীদেরও ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকো পার হতে হয়।’

ভূইয়াকান্দা গ্রামের জহির প্যাদা জানান, এর আগে ইউপি নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান ও মেম্বর প্রার্থীরা সকলেই এই সাঁকোর পরিবর্তে ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কেউই কথা রাখেননি।

তিনি আরও জানান, সাঁকোটি শুধু ছয় গ্রামের ৫ সহস্রাধিক মানুষ ও শিক্ষার্থীরা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি এসব গ্রামের মানুষের খেতে উৎপাদিত সবজি, তরমুজসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে সাঁকোটি ব্যবহার করা হয়। তাই মানুষ কোনো রকমে হেঁটে পার হতে পারলেও, মালামাল নিয়ে পার হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

মৌডুবি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আসলেই সাঁকোটি জনগুরুত্বপূর্ণ। জনদুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সাঁকোটির স্থানে একটি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে কাছে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। সেখানে সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

Activities of certain entities, and activities supporting them can now be banned

1h ago