মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় এখন সময়ের দাবি
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকারের কাছে জনসংখ্যা কোনো সমস্যা নয়। কারণ তারা জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করে সম্পদ হিসেবে দেখাতে চায়। ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করা গেলে তা সম্পদ হিসেবেই বিবেচিত হওয়ার কথা। সরকার তাই জনসংখ্যাকে সম্পদে রূপান্তর করার জন্যে উদ্যোগী হয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এসব কর্মকাণ্ডে মানসম্মত জনশক্তি কতটা অর্জিত হচ্ছে, তা বিবেচনার দাবি রাখে।
কারণ উদ্যোগগুলোয় যতটা না আন্তরিকতার ছোঁয়া পাওয়া যায়, তার থেকে বেশি ব্যবসায়িক মানসিকতা দৃশ্যমান। এখানে রাজনীতিও সমানভাবে সক্রিয়। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, শুধুমাত্র আস্ফালন দিয়েই জনশক্তি তৈরির কাজ চলমান। সরকারের অবহেলায় দেশে মধ্যম স্তরের জনশক্তি দীর্ঘদিন দুই শতাংশের উপরে উঠতে পারেনি। অথচ ২০২০ সালে এই জনশক্তি ২০ শতাংশ, ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালে ৪০ শতাংশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। করোনা ২০২০ সালের অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলে হয়তো লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি। আশা করা যায় আগামী লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে সরকার সক্ষম হবে।
সরকার নিজেদের লক্ষ্য পূরণে বিশাল কর্মকাণ্ডের জাল বিস্তার করেছে। রাজনৈতিক মতাদর্শে বিভক্ত পেশাজীবীরা এই আনন্দে আত্মহারা। সংশ্লিষ্ট সবাই বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের আনন্দ প্রকাশ করে চলেছে। কিন্তু, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পূর্ণটাই পরিকল্পনাহীন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকে সামনে রেখে সরকার কোনোদিন ভেবেও দেখেনি দেশ ও জাতির কল্যাণে জনশক্তির রূপ কেমন হওয়া প্রয়োজন। কোন পেশাজীবী কতজন প্রয়োজন? শুধু দরজা খুলে দিয়েছে, আপাতত বাজার ব্যবস্থার চাহিদা বিবেচনায় জনগণ শুধু দক্ষতা অর্জনের সনদ সংগ্রহ করছে। এই দক্ষতা কোথায়, কীভাবে ব্যবহার হবে, তার কোনো পরিকল্পনা না থাকায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়া ছাড়া আর কোনো উপকার হচ্ছে বলে মনে হয় না। আবার সাধারণ মানুষের মনে কী হচ্ছে, তাতে সরকারের কিছু যায় আসে না। তারা তাদের নেওয়া কর্মযজ্ঞের কাহিনী প্রচারে ব্যস্ত।
মানবসম্পদ পরিকল্পনা ছাড়া মুক্তির পথ পাওয়া যেতে পারে না। পরিকল্পনা করেই জনশক্তি তৈরি করা হলে কেউ বেকার থাকার কথা নয়। আবার এখানে পেশাজীবীদের ভূমিকা গোষ্ঠী-স্বার্থের মধ্যে সীমিত। সুষ্ঠু কাজের পরিবেশের জন্যে বিভিন্ন পর্যায়ের জনবল নিয়ে দলের বা টিমের প্রয়োজন রয়েছে, তা উচ্চপর্যায়ের পেশাজীবীরা বিশ্বাস করে না। ফলে তারা টিমের অন্য সদস্যের কথা ভাবতে চায় না। শুধুমাত্র নিজের বা নিজগোষ্ঠীর কথা ভাবতে গিয়ে নিজেরাও বিপদে আছে এবং দেশ ও জাতিকে সমস্যার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। শিক্ষা অনুযায়ী কর্মের বিভাজন নেই। ক্ষমতাকেন্দ্রিক মানুষেরা সব কাজের মূল দায়িত্ব নিজেদের কাছে রাখতে চায়। আবার কোনো জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে চায় না। অনেক সমস্যার মধ্যেও কারিগরি ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রে কিছুটা হলেও টিমের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও অন্যান্য সেবার ক্ষেত্রে টিম বিরল। আমাদের কর্মক্ষেত্রে টিম তৈরি না করার কারণে সেবার মানও নিম্নমুখী।
দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় সেবার মান ঠিক রাখতে টিমের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাবে না। দেশে আজ জনগণের জন্যে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার নামে এলএমএফ কোর্স বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে এমবিবিএস ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানো হবে। এ ব্যবস্থায় বর্তমানে গ্রামের মানুষ চিকিৎসা সেবার অনেকটাই বাইরে, যেটুকু আছে সে সুযোগগ্রহণও তাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সীমিত। বাংলাদেশে একজন চিকিৎসকের ফি পাঁচ থেকে ছয় শ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুই জন চিকিৎসকের বিপরীতে একজন নার্স রয়েছে আর স্বাস্থ্যসহকারীদের কোনো অনুপাতই নেই। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের অর্জন, সরকারের শত কড়াকড়ির পরও গ্রামে চিকিৎসকরা থাকতে চায় না। এই ব্যবস্থা কি একটা স্বাধীন দেশের জনগণের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারে? ব্যবস্থাপনা কোনো দায় না নিয়ে চিকিৎসকের ওপর দায় চাপিয়ে লাভ কী? মানবসম্পদ পরিকল্পনার অভাবে এমন পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছ।
বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর অনেক শিক্ষার্থী আর এগিয়ে যেতে পারে না এবং মাধ্যমিকের পরও অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে যায়। এসব শিক্ষার্থীদের মানবসম্পদ পরিকল্পনার মধ্যে আনা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশের জন্যে দেশ ও জাতির প্রয়োজন বিবেচনায় জনশক্তি তৈরির পরিকল্পনা চাই। উচ্চশিক্ষার দ্বার মেধা ও দেশের প্রয়োজন বিবেচনায় সবার জন্যে উন্মুক্ত থাকবে। শিক্ষানীতিতে আছে ‘চার বছরের সম্মান স্নাতক ডিগ্রিকে সমাপনী ডিগ্রি হিসেবে এবং উচ্চশিক্ষায় শিক্ষকতা ব্যতীত অন্য সকল কর্মক্ষেত্রে যোগদানের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে’। কিন্তু, আমাদের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের আগে থামতে চান না। আমাদের মর্যাদাভিত্তিক সমাজও এই দায় এড়াতে পারবে না। ইসলামের ইতিহাসে মাস্টার্স করে ব্যাংকে চাকরি করছে, অফিস সহকারীর দায়িত্ব পালন করছে, চাকরির সঙ্গে কর্মের যোগসূত্র নেই। কিন্তু, সে বিবেচনা করার সময়ও কারো নেই। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-কৃষিবিদরা প্রশাসনে কাজ করছেন। দেশের অনক্ষর-অনাহারী মানুষদের কষ্টের করের টাকায় এসব পেশাজীবীরা তৈরি হয়ে থাকেন। কিন্তু, তারা তা বিশ্বাসই করেন না। নিজেদের মেধা ও অভিভাবকের সামর্থ্যকেই পেশাজীবী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালনকারী উপাদান মনে করে স্বস্বার্থে নিবেদিত থাকেন।
দেশের মর্যাদাভিত্তিক সমাজ গঠনে শিক্ষানীতিও পিছিয়ে নেই। শিক্ষানীতিতে প্রয়োজনের চাইতে অপ্রয়োজনেই বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করা আছে। প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন নতুন ফ্যাকাল্টি চালু করলেই যেখানে কাজ হয়ে যায়, সেখানে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ চলমান। প্রকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বলা আছে ‘দেশের উন্নয়নে, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে, দারিদ্র্য দূরীকরণে এবং সমাজ ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে এই অংশের শিক্ষার্থীরা কার্যকর অবদান রাখতে পারেন’। কিন্তু, আমাদের প্রকৌশলীরা এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে কি ভূমিকা রাখছেন? বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই বিষয়গুলোতে শিক্ষার কোনো দায় নেই। প্রকৌশল, চিকিৎসা, কৃষিশিক্ষার দায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের। তবে, কেউই নিজের মাতব্বরি ছাড়তে নারাজ। দেশের বড় একটা প্রকল্পও আমাদের দক্ষ প্রকৌশলীদের দিয়ে হয়নি। প্রকল্প যারা নিজেরা তৈরি করতে পারে না, তারা নির্মাণ বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা রাখতে পারে না বলেই প্রকল্প জনকল্যাণের হচ্ছে না, জীবনকাল পাচ্ছে না, নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না, প্রকল্পের ব্যয় দুই থেকে তিনি গুণ বেড়ে যাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত ঠিকাদাররা, দক্ষ প্রকৌশলীদের করা টেন্ডারের ৫৫ শতাংশ কমে নির্ধারিত কাজ শেষে লাভ করে বাড়ি চলে যাচ্ছে আর এরা বালিশ কিনছে। এই কেনার বিষয়েও বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কারো দক্ষতা কম নয়। কেউ পর্দা কিনছে, কেউ কাঠের চেয়ার কিনছে, কেউ কলাগাছ বা নারকেল গাছ কিনছে। শিক্ষা অনুযায়ী কাজের বিভাজন না থাকায় অন্যের কাজ করতে গিয়ে অধিকাংশই এমন দক্ষতার প্রকাশ ঘটাচ্ছে! এসবই বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল কী না জানি না।
বাংলাদেশ এমন দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আরও বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত। নিয়মিত বিরতিতে এসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা চলছে। সরকার সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ভুলে গিয়েছে। সরকারের কাছে সব পেশাজীবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি আছে। শিল্প বিশ্ববিদ্যালয়, আইন বিশ্ববিদ্যালয়, চামড়া বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি দাবির সঙ্গে আবার শিক্ষানীতিতে কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়, তথ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষায় বাংলাদেশকে বিশ্বের রোল মডেল করতে বোধ করি এমন শিক্ষার বিস্তারের ব্যবস্থা চলমান। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা তো বলতেই চাই না। দেশে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যে বাধ্যবাধকতা আছে, এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যে তাও নেই। সরকার যদি তাদের গৃহীত শিক্ষানীতির প্রতি ন্যূনতম আন্তরিক হতো, তাহলে দেশে এত স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের প্রতিযোগিতা চলত না। প্রশাসনসহ সর্বত্র স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী যারা আছেন, তাদের শিক্ষায় ও গবেষণায় পদায়ন করা হোক।
শিক্ষানীতি ২০১০ এ দেশের প্রয়োজনে আরও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। উন্নত বিশ্বে এসব পেশাজীবী ছয় শতাংশের মতো থাকে। আমাদের দেশেও প্রায় ছয় শতাংশই আছে। কিন্তু, কারিগরি কর্মক্ষেত্রে টিমের অন্যান্যদের শতাংশ হারে উন্নত দেশের তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে। আমাদের মানবসম্পদ পরিকল্পনা না থাকার সুযোগে শিক্ষানীতিতে মর্যাদাভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়ক সুপারিশ আছে। শিক্ষা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন না করার কারণে আমাদের নদী একপাশ দিয়ে সংস্কার করতে শুরু করলে কাজ যত এগিয়ে যায়, ততই পূর্বের অংশগুলো ভরাট হতে শুরু করে। আমাদের সড়কের নির্মাণ যত এগিয়ে যায়, পেছনের সড়কগুলোকে আবার ততই পূর্বের অবস্থায় ফেরত পেয়ে যায় জনগণ। আমাদের ইমারত হস্তান্তরের আগেই তার ছাদ ভেঙে পড়ে। যশোরের দুঃখ ভবদহ। বিদেশি পরামর্শে এ অঞ্চলে প্রকল্প করে ১০ বছরের মধ্যে তা মানুষের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। আজ প্রায় ৪০ বছর ধরে মানুষ পানিবন্দি। আমাদের দক্ষ প্রকৌশলীরা প্রকল্প প্রণয়ন করতে পারেন না, তাই প্রকল্পের জনকল্যাণও বুঝতে পারেন না। এমন দক্ষ পেশাজীবী তৈরিতে শিক্ষা বাজেটের একটা বড় অংশ ব্যয় হয়ে যায়। বরং এই অর্থ দিয়ে টিমের অন্য অংশকে দক্ষ করতে পারলে দেশ ও জাতি উপকৃত হতো। এটা শুধু কারিগরি কর্মকাণ্ডের টিমের জন্যে নয়, বরং চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প সর্বত্রই টিমের অন্যান্যদের দক্ষ করা প্রয়োজন।
জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে দেশে এখনই মানবসম্পদ পরিকল্পনা শুরু করা প্রয়োজন। যেই পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষ থাকবে। দেশ-বিদেশ বিবেচনায় কোন পেশার কতজন পেশাজীবী প্রয়োজন, তার একটা হিসাব হবে। সে মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি হবে। সেখানে যা পড়ানো হবে, তার সঙ্গে বাজার চাহিদার সমন্বয় করা হবে। বাজার চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন বিষয় খোলার ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষা অনুযায়ী কর্মের ব্যবস্থা হবে। মেধা ও চাহিদার ভিত্তিতে সবার উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সবার জন্যে বাধ্যতামূলক মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সরকারের সামর্থ্য বিবেচনায় দেশে সবার বেতন ও পদোন্নতির সমান সুযোগ থাকতে হবে।
আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল দেশ ও জাতির কল্যাণে এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বপ্নে পাওয়া উন্নয়নের মধ্যে নিবেদিত আছে। কয়েকদিন আগে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক জানালেন চাকরির প্রথম পদোন্নতি পেতে তার ১৮ বছর এবং দ্বিতীয়টা পেতেও ১৮ বছর মোট ৩৬ বছর পার হয়ে গেল। এ বছরই চাকরি শেষ, তাই পরের পদোন্নতির সুযোগ আর নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান নিয়ামক শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার লক্ষণ এমনটাই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখছে সরকার তার প্রশাসনে পদের তিন গুণ লোককে পদোন্নতি দিচ্ছে। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষকদের প্রাপ্ত ন্যূনতম পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে না পারলেও কী হবে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের পুষ্টি পূরণে অভিভাবকদের চিঠি দিয়ে জানানোর কাজে নিজেদের শ্রম ও মেধা ব্যয় করছে।
তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় দিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনা সময়ের অভাবে করা সম্ভব নয়। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় আজ সময়ের দাবি।
এম আর খায়রুল উমাম, সাবেক সভাপতি, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)
(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)
Comments