জুন-জুলাইয়ের আগে ভ্যাকসিন রপ্তানি অনিশ্চিত: সেরামের সিইও

কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন, সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা।

আগামী জুন-জুলাইয়ের আগে ভ্যাকসিন রপ্তানির বিষয়ে ‘কোনো নিশ্চয়তা নেই’ বলে গতকাল বুধবার জানান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালা। ফলে দেশে চলমান কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘আপাতত ভ্যাকসিন রপ্তানির বিষয়ে আমরা নিশ্চিত না। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাস দু-একের মতো আমাদের ভ্যাকসিন রপ্তানির দিকে নজর দেওয়া ঠিক হবে না। আশা করি জুন-জুলাই থেকে আবারও কিছু কিছু করে রপ্তানি শুরু করতে পারব। এই মুহূর্তে আমরা দেশের চাহিদাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

বাংলাদেশে মজুত থাকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতে তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ ভ্যাকসিনের এক কোটি দুই লাখ ডোজের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৭৫ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৯ ডোজ দেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ভ্যাকসিন রয়েছে, তাতে আর ১৫ দিনের মতো এই টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখা যাবে।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি তিন কোটি ডোজ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা। কিন্তু, গতকাল পর্যন্ত দুই ধাপে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে বাংলাদেশ। আর ভারত সরকার উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন।

সম্প্রতি ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে সেখানে ভ্যাকসিন সংকট দেখা দেয়। ফলে ভারত সরকার আগে দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ রেখেছে।

এ বিষয়ে আদর পুনাওয়ালা এনডিটিভিকে বলেন, ‘আগামী জুলাই পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে পারে।’

চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট ছয় ধাপে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে বিকল্প উৎস সন্ধানে আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চীনের কাছে থেকে সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনেকটা এগিয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকার চীনের এই ভ্যাকসিনটিকে এখন ‘জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের অনুমতি’ দিতে যাচ্ছে।

গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সরকারি বার্তাসংস্থা বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রাশিয়া সরকার বাংলাদেশকে আড়াই কোটি ডোজ ‘স্পুতনিক ভি’ ভ্যাকসিন কেনার অথবা এই পরিমাণ ভ্যাকসিন স্থানীয়ভাবে উৎপাদনে সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।

আরও পড়ুন:

জুলাইয়ের মধ্যে মাসে ১০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে সেরাম

বাংলাদেশকে আড়াই কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দিতে চায় রাশিয়া

টিকার বিকল্প উৎস সন্ধানে বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দিতে চায় চীনের সিনোফার্ম

ভারত সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় বাংলাদেশে টিকা পাঠাতে পারছে না সেরাম

অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়ায় অনিশ্চয়তা: অন্য উৎস খুঁজছে সরকার

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

7h ago