বাগেরহাটে এক সপ্তাহে ৬০০ ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে

হাসপাতালের ওয়ার্ডে শয্যার সংকটে মেঝেতে শুইয়ে চিকিৎসা চলছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুটির। ছবি: স্টার

বাগেরহাটে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ উদরাময়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ২০০ জনেরও বেশি রোগী এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খরার কারণে পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই দূষিত পানি পান করার ফলে পানিবাহিত রোগ বেড়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেন, ‘বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আমি তিন দিন ধরে আছি। এখানে একটি আইভি স্যালাইন ও দুটি ট্যাবলেট বাদে সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। আমি প্রায় তিন হাজার টাকায় ওষুধ কিনেছি। দরিদ্র রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’

স্যালাইন সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগীদের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীদের যেন বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে না হয় সেজন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

ডায়রিয়া নিয়ে কচুয়া থেকে আসা এক রোগীকে গত বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে পাঁচটি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অনেক চেষ্টা করে স্যালাইন কিনেছি। জীবন বাঁচাতে আমি কী করতে পারি?’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. মিরাজুল করিম বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আমাদের হাসপাতালে চার শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন বিশ থেকে পঁচিশ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। হঠাৎ করে রোগী বেড়ে যাওয়ার কারণে স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে।’

‘আমরা রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। গত এক সপ্তাহে আমরা দুই শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুদের চিকিৎসা দিয়েছি। এখনও অনেক রোগী ভর্তি আছেন,’ বলেন তিনি।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন জানান, উপকূলীয় জেলার বেশিরভাগ এলাকার পানি লবণাক্ত। খরার কারণে পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছয় শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আশা করছি বৃষ্টি হলে এবং বিশুদ্ধ পানি পেলে বেশীরভাগ রোগী ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাবেন।’

স্যালাইনের সংকট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডায়রিয়া রোগীদের জন্য আমাদের চারটি শয্যা আছে। আমরা সেখানে ১০টি বেড এনেছি। তারপর মেঝেতেও আছে। প্রতিদিন ভর্তির জন্য ২০ থেকে ২৫ জন রোগী আসছেন। আমরা স্যালাইন দিচ্ছি এবং কিছু কিনতেও হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব আরও বেশি স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ করার জন্য আমরা ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago