আমের্নীয় হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যার স্বীকৃতি বাইডেনের

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আটোমান বাহিনীর হাতে বিপুল সংখ্যক আর্মেনীয়র মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ছবি: রয়টার্স

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আটোমান বাহিনীর হাতে বিপুল সংখ্যক আর্মেনীয়র মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

যুক্তরাষ্ট্র এতদিন এই হত্যাযজ্ঞকে ‘ভয়াবহ খারাপ অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছিল। বিশ্লেষকদের মতে, ন্যাটো মিত্র তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতির শঙ্কায় এতোদিন গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

সিএনএন ও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’র স্বীকৃতি দিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ থেকেই যিনি ‘গণহত্যা’র এই স্বীকৃতি নিয়ে সরব ছিলেন।

প্রতি বছর ২৪ এপ্রিল আর্মেনিয়া এই দিনটিকে গণহত্যার সূচনা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

গতকাল শনিবার এই হত্যাযজ্ঞ শুরুর ১০৬তম বার্ষিকীতে দেয়া এক বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেন, ‘প্রতি বছর এই দিনে আমরা অটোমানদের গণহত্যায় নিহত সব আর্মেনীয়দের স্মরণ করি। এবং এই ধরনের নৃশংসতা যেন আবার না ঘটে তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই।’

ওই বিবৃতিতে বাইডেন আরো বলেন, ‘যা আমরা হারিয়েছি তার জন্য আজ শোক প্রকাশ করছি। আর চলুন সেই পৃথিবী গড়ার দিকে নজর দেই, যা আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য গড়তে চাই। যেখানে অসহিষ্ণুতা আর গোঁড়ামির জায়গা হবে না। মানবাধিকারকে সম্মান জানানো হবে। মানুষ খুঁজে পাবে তার মর্যাদা ও নিরাপত্তা।’

বিবৃতিতে বাইডেন পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে এ ধরনের নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সংকল্পে পুনরায় একত্রিত হওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। বলেন, ‘চলুন আমরা সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য উপশমের খোঁজে নামি।’

রাশিয়ার কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর তুর্কি অটোম্যানরা এর জন্য খ্রিস্টান আর্মেনীয়দের বিশ্বাসঘাতকতাকে দায়ী করে। সেসময় সিরিয়ার মরুভূমি ও আশপাশের এলাকাগুলোতে বিপুল সংখ্যক আর্মেনীয়কে নির্বাসনে পাঠায়। সেসময় লাখ লাখ আর্মেনীয় হয় গণহত্যার শিকার হয় অথবা অনাহারে কিংবা রোগে ভুগে মারা যায়।

আর্মেনীয়দের দাবি ১৯১৫ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে সংঘটিত ওই হত্যাযজ্ঞে অন্তত ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তবে তুরস্ক বলে আসছে মৃতের সংখ্যা এর পাঁচভাগের একভাগ। আর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধের কারণেই এটি ঘটেছে।

অবশ্য গণহত্যা গবেষকদের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারসের (আইএজিএস) ধারণা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ওই ঘটনায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এদিকে আর্মেনীয় হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যার স্বীকৃতির দেয়ার বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তুরস্ক। জো বাইডেনের এই ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে গতকাল তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু বলেন, ‘তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছে। আমরা আমাদের ইতিহাসের বিষয়ে কারও কাছ থেকে শিখব না।

পরে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা যায়, আঙ্কারার প্রতিক্রিয়া জানাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে এর মধ্যে ডেকে পাঠিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago