ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৩ মাসে ৩৮ মামলা

বাকস্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৩৮টি মামলার শিকার হয়েছেন বিভিন্ন ব্যক্তি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বাকস্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৩৮টি মামলার শিকার হয়েছেন বিভিন্ন ব্যক্তি।

বাকস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান আর্টিকেল ১৯ গতকাল সোমবার এই তথ্য জানায়।

আসামিদের মধ্যে অন্তত পাঁচ জন সাংবাদিক রয়েছেন উল্লেখ করে আর্টিকেল ১৯-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘যারা দুর্নীতি বা নৈতিকতার লঙ্ঘন নিয়ে সংবাদ বা মতামত প্রকাশ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা দেখে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’

আর্টিকেল ১৯ জানায়, সম্প্রতিকালে ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘আমার হবিগঞ্জ’ নামের একটি পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে থাকা মন্দিরের জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে গত ১৯ এপ্রিল পত্রিকাটি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

আর্টিকেল ১৯’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভুক্তভোগীরা বলছেন, এমপির সরাসরি নির্দেশে পুলিশের উপস্থিতিতেই তাদের নিউজরুমে হামলা চালানো হয়।’

পরে হামলাকারীরাই উল্টো তাদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে পত্রিকাটির সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করে।

আর্টিকেল ১৯’র বিবৃতিতে বলা হয়, খুলনা ও রংপুর সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জন্য দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। তাদের মধ্যে খুলনার সাংবাদিক আবু তায়েবকে গত ২১ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখনো জেলেই রয়েছেন।

অন্যদিকে, রংপুরের মেয়র তার দুর্নীতি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে রতন সরকার নামে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রতন সরকারকে আগেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এখন তিনি গ্রেপ্তার বা তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটার আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

সাংবাদিকদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এসব গ্রেপ্তার, হামলা ও মামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’

এ ছাড়া, ‘আমার হবিগঞ্জ’ পত্রিকা অফিসে হামলার অভিযোগ তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আর্টিকেল ১৯।

আর্টিকেল ১৯’র বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক ফারুক ফয়সাল বলেন, ‘দুর্নীতির ঘটনা যারা প্রকাশ করে দেয়, তাদের দমন করতে ক্ষমতাসীনরা বরাবরই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে আসছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই আইনে হওয়া মামলাগুলোর বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের করা। মহামারিকালে এর অপপ্রয়োগ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানে ব্যবহার করা উচিত বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইনে বলা হয়েছে, ১২০ দিনের মধ্যে এসব মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। সম্ভব না হলে নিষ্পত্তির জন্য আরও ৯০ দিন পাওয়া যাবে। এই লিখিত নিয়ম মানা হলে লেখক মুশতাক আহমেদকে জেলে মারা যেতে হতো না।

এ ছাড়া, সরকারের প্রতি আইনটি পুনর্বিবেচনা করে দেখারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago