যে কারণে ভারতের করোনা সংকটে উদ্বিগ্ন বিশ্ব

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় উদ্বিগ্ন সারা বিশ্ব। এটি এখন শুধু ভারতের নয়, বরং সবারই সমস্যা।
ভারতের নয়াদিল্লির গাজিয়াবাদে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আসা এক নারীকে গুরুদুয়ারায় অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় উদ্বিগ্ন সারা বিশ্ব। এটি এখন শুধু ভারতের নয়, বরং সবারই সমস্যা।

আজ বুধবার বিবিসি’র প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র প্রধান বিজ্ঞানী ড. সৌম্য স্বামীনাথান বলেছেন, ‘ভাইরাসের কোনো সীমান্ত নেই, কোনো জাতীয়তা নেই। এর নেই কোনো বয়স, লিঙ্গ বা ধর্মভেদ। আজকে ভারতে যা হচ্ছে দুর্ভাগ্যবশত তা অন্য দেশেও হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, এই মহামারি বুঝিয়ে দিয়েছে সারা পৃথিবীতে আন্তঃযোগাযোগ কতটা শক্তিশালী। যদি একটি দেশ ভীষণভাবে সংক্রমিত হয়, তাহলে তা অন্য দেশেও ছড়িয়ে যেতে পারে।

এমনকি, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, একাধিকবার পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টিন সত্ত্বেও সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে। কোনো সংক্রমিত এলাকা থেকে কেউ আসলে তার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে উচ্চমাত্রায়।

সম্প্রতি, নয়াদিল্লি থেকে হংকংগামী এক ফ্লাইটে প্রায় ৫০ যাত্রীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে করোনার ‘বি-ওয়ান-সিক্স হান্ড্রেড সেভেনটিন’ নামের ভ্যারিয়েন্টটি সৃষ্টি করেছে নতুন আতঙ্ক। এর ‘ডাবল মিউটেশন’ হয়েছে বলেও বলছেন অনেকে। গবেষণাগারেও দেখা গেছে, একে প্রতিরোধ করতে অ্যান্টিবডিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ওয়েলকাম স্যানজার ইনস্টিটিউটের কোভিড-১৯ জেনোমিকস ইনিশিয়েটিভের পরিচালক ড. জেফ ব্যারেট বলেছেন, ‘আমি মনে করি আমাদের আরও ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তবে এখন এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

একটি দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে সেখানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ কারণে প্রতিটি সংক্রমণ ভাইরাসটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করছে। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, মিউটেশনের ফলে ভাইরাসটি এমন পর্যায়ে চলে আসতে পারে যেখানে ভ্যাকসিন অকার্যকর।

কোভিড-১৯ জেনোমিকস ইউকে কনসোর্টিয়ামের পরিচালক অধ্যাপক শ্যারন পিকক জোর দিয়েছেন ভাইরাসটির ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টির পথ বন্ধ করার ওপর। তিনি মনে করেন, ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টির পথ বন্ধ করতে পারলে বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

তিনি লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব ও টিকাদান কর্মসূচিকে খুবই জরুরি বলে মনে করছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের কম মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে এবং দুই শতাংশের কম মানুষকে পুরোপুরি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।

ভারতের এমন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা টিকা দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র প্রধান বিজ্ঞানী ড. স্বামীনাথান বলেন, ‘আমাদের উচিত যত দ্রুত সম্ভব টিকা দেওয়ার সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেওয়া। ভাইরাসটি সংক্রমণের জন্যে সব চেষ্টাই করবে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সারা বিশ্বের দিকে তাকালে মহামারি শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং দেখা যাচ্ছে, ভাইরাসটি এক দেশের পর আরেক দেশে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছে। ভারতের এই করুণ দশা থেকে এটাই শিক্ষা নিতে হবে যে আসলে কেউই নিরাপদ নয়।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago