দিল্লির শ্মশানে সরকারি হিসাবের দ্বিগুণ মরদেহ
গত সপ্তাহে দিল্লির শ্মশানগুলোতে প্রতি দিন ৬০০-র বেশি মরদেহ সৎকার করা হয়েছে, যা সরকারি হিসাবে থাকা ‘করোনায় মৃত্যু’র সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।
উত্তর দিল্লি মিউনিসিপাল করপোরেশনের (এনডিএমসি) মেয়র গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, টানা গত ছয় দিন সেখানে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩০০-র বেশি।
এনডিএমসির মেয়র জয় প্রকাশ বলেন, ‘সরকারি তথ্যে মৃত্যুর সংবাদ প্রতিদিন প্রায় ৩০০ হলেও নিশ্চিতভাবেই শ্মশানগুলোতে প্রতি দিন ৬০০-র বেশি মরদেহ সৎকার করা হচ্ছে।’
দিল্লির তিনটি পৌর করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার সেখানে মোট ৬৩১টি মরদেহ দাহ ও ২২টি মরদেহ কবর দেওয়া হয়েছে।
তবে, গত মঙ্গলবার দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে বলা হয়েছে, সেখানে এক দিনে করোনায় ৩৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল বুধবার দিল্লির বৃহত্তম শ্মশান নিগমবোধ ঘাটের কর্মকর্তা সুমন কুমার গুপ্ত সিএনএন’কে বলেছেন, ‘আমরা সকাল থেকেই মরদেহ পেতে শুরু করি। একের পর এক আসতে থাকে। রাতে আমাদের শ্মশান বন্ধ করতে হয়, তা না হলে আমাদের কাছে রাতেও মরদেহ আসতো।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, কেবল নিগমবোধ ঘাটেই ১৯ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে প্রতি দিন ৯০টিরও বেশি মরদেহ দাহ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’র এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দিল্লির পৌরসভা কেবল হাসপাতালে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের ‘করোনায় মৃত’ হিসেবে গণনা করছে। কিন্তু, শ্মশানঘাটে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, অনেক করোনা রোগী প্রতি দিন বাড়িতে কিংবা হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ভর্তি হতে না পেরে মারা যাচ্ছেন। বাড়িতে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দিল্লির পৌরসভা তাদেরকে ‘করোনায় মৃত’ হিসেবে গণনা করছে না।
এদিকে, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে শ্মশানে মরদেহ সৎকারকাজ উদ্বেগজনক-হারে বেড়ে গেছে। শ্মশানগুলোতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাঠের সরবরাহের অনুরোধ করেছেন উত্তর দিল্লির মেয়র জয় প্রকাশ।
সিএনএন জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে পাঠানো এক চিঠিতে শ্মশানগুলোতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাঠের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বন বিভাগকে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন উত্তর দিল্লির মেয়র জয় প্রকাশ।
চিঠিতে তিনি বলেন, ‘দয়া করে বন বিভাগকে যথাযথ নির্দেশনা দিন যাতে শ্মশানগুলো তাদের কাজ নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যেতে পারে এবং শোকগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যেন কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়।’
ভারতে গতকাল পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯৭ হাজার ২৬৭ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। করোনায় মারা গেছেন ২ লাখ ১ হাজার ১৮৭ জন।
Comments