লম্বা সময় মাঠে থাকার প্রতিক্রিয়ায় এমন ব্যাটিং ধস!

শনিবার পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের জন্য ছিল চরম হতাশার দিন। সকালে শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে ৪৯৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে মাত্র ২৫১ রানে।
Taijul Islam hit wicket dismissing  by Suranga Lakmal
পায়ের বুট খুলে গিয়ে স্টাম্পে লাগলে হিট উইকেট হন তাইজুল ইসলাম। তার আউটে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ছবি: এসএলসি

প্রথম টেস্টে ফিল্ডিং করতে হয়েছিল ১৭৯ ওভার। এই টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১৫৯ ওভারের বেশি। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের লম্বা সময় মাঠে থাকার এই প্রতিক্রিয়া নাকি পড়েছে তাদের ব্যাটিংয়ে। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে আচমকা ধসের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এই কারণকে বড় করেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

শনিবার পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের জন্য ছিল চরম হতাশার দিন। সকালে শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে ৪৯৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে মাত্র ২৫১ রানে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে ফলোঅন না করিয়ে ফের ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেটে ১৭ রান করেছে স্বাগতিকরা। ৮ উইকেটে রেখে তারা এগিয়ে গেছে ২৫৯ রানে। অতি নাটকীয় কিছু না হলে এই টেস্টে হার ঠেকানো প্রায় অসম্ভব।

অথচ একটা পর্যায়ে ভাল অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বড় রানের জবাবে উদ্বোধনী জুটিতেই এসেছিল ৯৮ রান। দ্যুতিময় ব্যাট করে দারুণ শুরু পাইয়ে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু তৃতীয় দিনে পাল্লেকেলের এই উইকেট কথা বলতে থাকে স্পিনারদের হয়ে।

লাঞ্চের আগে পর পর দুই উইকেট তুলে নেয় তারা। লাঞ্চ থেকে ফেরার পর নব্বুইর ঘরে আউট হন তামিম। সেই ধাক্কা সামলে মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমের ৬৩ রানের একটা জুটি হয়েছে। কিন্তু এরপর ৩৭ রানেই পড়েছে শেষ ৭ উইকেট।

দিনশেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে আচমকা এই ব্যাটিং ধসের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রচুর মানসিক ও শারীরিক ধকলের কথা উল্লেখ্য করলেন ডমিঙ্গো,  ‘আমার মনে হয় এটা (ব্যাটিং ধস) বেশ কিছু কারণে এমন হয়েছে। ছেলেরা গত ৪-৫ দিনে অনেক সময় মাঠে কাটিয়েছে, তারা হয়ত মানসিকভাবে একটু ক্লান্ত। আমার মনে হয় আমরা শেষ ৪-৫ দিনে প্রায় ৩৭০ ওভারের জন্য (দুই টেস্টে ফিল্ডিং মিলিয়ে ৩৩৮ ওভার) মাঠে ছিলাম, যা অবশ্যই একজন ক্রিকেটারকে ক্লান্ত করে ফেলে। শারীরিক এবং মানসিকভাবে। সেটি একটি কারণ হতে পারে।’

থিতু হয়ে অধিনায়ক মুমিনুল হক লো ফুলটসে এলবিডব্লিউ হয়েছেন। লিটন দাস মেটাতে পারেননি সময়ের দাবি। ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। স্লিপে ক্যাচ দেন তামিম, নাজমুল হোসেন শান্তও।

সোজা বল পায়ে খেলে এলবিডব্লিউ হন ৪০ রান করা মুশফিক। কোচের মতে উইকেটের ধরন আর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ক্লান্তি মিলিয়ে হয়েছে এমন ধস, ‘আমার মনে দুটি মিলিয়েই হয়েছে। তারা সেট ছিল এবং ভালো খেলছিল। কিন্তু ছেলেরা পরিশ্রম করছে, অনেক চেষ্টা করছে, তারা মাঠে পরিশ্রম করছে, নেটে করছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ব্যাটিংয়ের সময় কিছু বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মঠে এত সময় কাটিয়েছি যে সব দলেরই ব্রেকিং পয়েন্ট থাকে, আমাদের ব্রেকিং পয়েন্ট ছিল আজকে যখন আমরা ব্যাটিং করছিলাম। আজকে আমাদের জন্য কঠিন দিন ছিল।’

সব আউটকে তাই সাফাই গাইতে পারছেন না কোচ। তার আশা দ্বিতীয় ইনিংসে অবিশ্বাস্য কিছু করবেন মুমিনুলরা, ‘অবশ্যই সেখানে একটি বা দুটি সফট ডিসমিসাল ছিল। কিন্তু আমাদের দ্বিতীয় ইনিংস এখনও বাকি আছে এবং আমাদের নিজেদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে সেটির জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago