চট্টগ্রাম

সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বেসরকারি জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এফএমসি ডকইয়ার্ড-এর এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে পোর্টল্যান্ড গ্রুপের অফিসে একটি সভায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন এফএমসি ডকইয়ার্ডের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম-হিসাব) মো. শাহাদাত হোসেন আরিফ।

শাহাদাতের অভিযোগ, ‘জাহাজ তৈরি বাবদ টাকা চাইতে গেলে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও মারধর করা হয়।’

এজিএম শাহাদাত হোসেন আরিফ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দু’বছর আগে ছয়টি কার্গো জাহাজ নির্মাণের জন্য চুক্তি হয়েছিল চট্টগ্রামের বেসরকারি জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এফএমসি ডকইয়ার্ড ও আলাউদ্দিন নাসিম এবং নিজাম হাজারীর মুহুরী শিপিং লিমিটেডের মধ্যে। প্রতিটি জাহাজ নির্মাণের জন্য সাড়ে বারো কোটি টাকা করে চুক্তি হয়।’

‘ইতোমধ্যে একটি জাহাজ পানিতে নেমে গেছে, বাকিগুলো আগামী অগাস্টের মধ্যে রেডি করে নামিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। আজ পেমেন্ট সংক্রান্ত মিটিং ছিল। দফায় দফায় করোনার লকডাউন ও নানান বিধি-নিষেধের কারণে আমরা সময়মতো জাহাজের কাজ শেষ করতে পারিনি এবং বিদেশ থেকে মালামাল আনতে পারিনি। তাই আজকে আমিসহ আমাদের চার জন ওনাদের সঙ্গে আরও এক বছর সময় বাড়াতে বলেছি,’ বলেন আরিফ।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি এই মুহূর্তে আসলে টাকা ছাড়া কাজ করা ডিফিকাল্ট, টাকা দিলে আমাদের কাজ কন্টিনিউ করতে পারব। একপর্যায়ে সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী আমাদের প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গালাগালি শুরু করেন ও নিচ থেকে দুইটি ছেলেকে ডেকে এনে আমাকে পাশের রুমে নিয়ে গিয়ে আঘাত করেন।’

এজিএম আরিফ অভিযোগ করেন, ‘এরপর বাকি জাহাজ আমরা আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ডেলিভারি দেব- এমন লেখা একটি কাগজে তিনি আমাদের সবার সই নেন। আমি পরে বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পোর্টল্যান্ড গ্রুপের এমডি মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ইয়াসিন (এফএমসি ডক ইয়ার্ডের চেয়ারম্যান) আমার বন্ধু। তাদের এক বছরের মধ্যে জাহাজ বানিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। আলাউদ্দিন নাসিম ব্যাংক লোন নিয়ে জাহাজ বানানোর জন্য টাকা দিয়েছে। আমি এটার মিডিয়া হয়ে নিজেই বিপদে পড়েছি। টাকা নিয়ে ইয়াসিন বিদেশে ঘুরছেন, কিন্তু জাহাজ বানিয়ে দিচ্ছেন না। অধিকাংশ টাকা দেওয়া হয়েছে। কিছু টাকা ছিল যা চুক্তি অনুযায়ী জাহাজ ডেলিভারির পর দেওয়ার কথা। কিন্তু, এখন এসে ওনারা সেই টাকা চাচ্ছেন ডেলিভারি ছাড়া।’

মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে আরও বলেন, ‘মারামারির কোনো কিছু হয়নি, সামান্য রাগারাগি হয়েছে, হবারই কথা- এতো দিনের ব্যাংক লোনগুলো কে টানবে। আমার সামনে কোনো কিছু হয়নি। আর আমার অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে।’

এফএমসি ডক ইয়ার্ডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোরশেদুল আলম বলেন, ‘আমি আসলে ওনার এ ধরনের আচরণে হতবাক। আমাদের জাহাজগুলো বানানো প্রায়ই শেষ, কিন্তু ফিনিশিং কাজ করোনার কারণে আটকে আছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বসব।’

তবে এই বিষয়ে ডকইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ইয়াসিন বিদেশে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীকে মুঠোফোনে কল ও ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

3h ago