এমপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করছেন হেফাজত সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে
সাইবার অপরাধের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৪ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এজাহার দায়ের করেছেন সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
তবে এজাহারটি এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান।
তিনি জানান, এজাহারে সাইবার অপরাধের কথা উল্লেখ করায় তা যাচাই করতে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সংসদ সদস্যের পক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল জব্বার মামুন থানায় এসে এজাহারটি জমা দেন। এজাহারে অজ্ঞাতনামা আরও এক থেকে দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে হেফাজতে ইসলামের জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মাওলানা সাজেদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুবারক উল্লাহ ছাড়াও আরো ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য ১২ জন হলেন- মাওলানা আশরাফুল হোসেন তপু, বোরহান উদ্দিন কাসেমি, আলী আজম, এরশাদ উল্লাহ, জুনায়েদ আল কাসেমি, নোমান আল হাবিব, মমিনুল হাসান তাজ, সুলেমান মোল্লা, এনামুল হক, আব্দুল হাকিম, মঞ্জুরুল হক ও খালেদ মোশাররফ।
এজাহারে বাদি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারকীয় তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। তারা তাণ্ডব চালিয়ে সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র ও গান পাউডারসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ক্ষতিসাধন করে।
এর আগে মাওলানা সাজেদুর রহমান এবং মুফতি মোবারক উল্লাহসহ অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, আইডি ও নিউজপোর্টালে সাইবার সন্ত্রাস সংগঠিত করে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক, বিদ্বেষ ও ঘৃণামূলক পোস্ট দেয়। এর মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এর মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এজাহারে নাম উল্লেখ করা আসামিসহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা গত ৩১ মার্চ উপস্থিত থেকে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা বক্তব্য ফেসবুকে প্রচার করে। সংবাদ সম্মেলনে তারা বাদি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি ঘটনার দায়ভার এমপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করেন। এ ধরনের বক্তব্য ডিজিটাল বিন্যাসের মাধ্যমে জাতীয় ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশ ও প্রচার করেন আসামিরা, যা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য।
সদর থানায় এজাহার জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইস উদ্দিন জানান, উল্লিখিত অভিযোগগুলোর স্ক্রিনশট বাদি তার এজাহারের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন। এইসব যাচাই-বাছাই করতে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর মামলাটি নথিভুক্ত করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন-
হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল কাসেমী গ্রেপ্তার
হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইসলামী আন্দোলনের নেতাসহ গ্রেপ্তার আরও ৬
‘হেফাজতের তাণ্ডব ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ’
Comments