লকডাউনেও গাবতলীতে মিলছে আন্তঃজেলা মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার

দেশে চলমান লকডাউনে গাবতলী টার্মিনালে যাত্রীর অপেক্ষায় আন্তঃজেলা মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: স্টার

দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের আওতায় বন্ধ আছে আন্তঃজেলা যাত্রী পরিবহন। আসন্ন ঈদুল ফিতরে এক জেলার গণপরিবহন অন্য জেলায় যেতে পারবে না বলেও জানিয়েছে সরকার।

এ অবস্থায় রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে আন্তঃজেলা মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কারে যাত্রীদের গন্তব্যে নিয়ে যেতে সহায়তা করতে দেখা যায় কর্মহীন হয়ে পড়া কয়েকজন পরিবহন শ্রমিককে।

গতকাল সোমবার গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে দেশের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য সেখানে বেশকিছু যাত্রী ভিড় করেছেন। সে সময় তাদেরকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক।

যাত্রীদের সংখ্যা দিনের চেয়ে রাতে বেশি হয় উল্লেখ করে তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, বাস না চলায় তারা এই লকডাউনেও বিকল্প ব্যবস্থায় যাত্রীদেরকে মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কারে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবেন। তবে, সে ক্ষেত্রে খরচ হবে বাস ভাড়ার চাইতে দ্বিগুণেরও বেশি।

যাত্রীরা রাজি হলে তারা পরিবহনের ব্যবস্থা করার জন্য সময় চেয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে ১০ জনের বেশি যাত্রী হলে তারা মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা করেন। আর যাত্রী সংখ্যা পাঁচের কম থাকলে প্রাইভেট কার ও পাঁচ থেকে ১০ হলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর, ভাড়া মিটমাট করে যাত্রীদের তুলে দেওয়া হয় গাড়িতে।

রাজধানীর মিরপুরের মো. সুমনের (৪৫) গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। ঈদে বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছায় তিনি গাবতলী এসেছেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাসে সাধারণত গাবতলী থেকে মাগুরার ভাড়া ৪০০ টাকা। ঈদে অনেক সময় তা বেড়ে ৫০০ টাকা হয়।’

‘তবে, আজ মাইক্রোবাসে মাগুরা যাওয়ার খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম ভাড়া পড়বে ১,৫০০ টাকা। মাইক্রোবাসে ১,০০০ টাকা ভাড়া হলে আমি দিতে রাজি আছি,’ যোগ করেন তিনি।

গাবতলী বাস টার্মিনাল প্রাঙ্গণে দেখা যায়, রংপুরে যাওয়ার জন্য একটি মাইক্রোবাস থেকে ডাকছিলেন একজন। ইতোমধ্যে ১০ জন যাত্রী হয়েছে সেটিতে। আরও তিন জন হলেই ছেড়ে দিবে মাইক্রোবাসটি। প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ১,৫০০ টাকা নেওয়া হবে বলেও জানলেন ওই ব্যক্তি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘আমি গাবতলীতে বাস কাউন্টারে কাজ করছি প্রায় ৩২ বছর। উত্তরবঙ্গের অনেক যাত্রী আমার পরিচিত। এই লকডাউনে তাদের অনেকে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে আমাদের মতো কর্মীদের বলেছে। আমরা তাদের জন্য রেন্ট-এ-কারসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’

‘এ ছাড়াও বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনেকেই যোগাযোগ না করেই টার্মিনালে আসে। তাদের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে গাড়ি ভর্তি করে দিই। জনপ্রতি ১০০ টাকা করে আমরা পাই,’ যোগ করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর একজন ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, টার্মিনালের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবহন কর্মী এ কাজ করছেন। গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হলে তারা বেকার হয়ে পড়েন। গত কয়েকদিন যাত্রীর সংখ্যা বেশি থাকায় এ কাজ করে তারা কিছু রোজগার করতে পারছেন।

Comments

The Daily Star  | English

US starts war with Iran bombing key nuclear sites

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

2h ago