রাবি উপাচার্যের জামাতার বিরুদ্ধে ‘গোপন নথি’ চুরির অভিযোগ

‘বড় ধরনের অনিয়মের আশঙ্কায়’ গত রোববার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুটি প্রশাসন ভবন ও সিনেট ভবন তালাবদ্ধ করে রেখেছিল ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা–কর্মীরা। তবে গতকাল সোমবার রাতে, সেই তালা ভেঙে সিন্ডিকেটের ‘গোপন নথিপত্র’ চুরির অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের জামাতার বিরুদ্ধে।

‘বড় ধরনের অনিয়মের আশঙ্কায়’ গত রোববার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুটি প্রশাসন ভবন ও সিনেট ভবন তালাবদ্ধ করে রেখেছিল ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা–কর্মীরা। তবে গতকাল সোমবার রাতে, সেই তালা ভেঙে সিন্ডিকেটের ‘গোপন নথিপত্র’ চুরির অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের জামাতার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্তের নাম এটিএম শাহেদ পারভেজ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) প্রভাষক। নিয়ম ভঙ্গ করে তাকে নিয়োগ দেওয়ার পুরনো অভিযোগ আছে উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে নথি চুরির অভিযোগ করেন বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা।

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবি সামাদী বলেন, ‘সোমবার রাতে উপাচার্যের জামাতা এ টি এম শাহেদ পারভেজের নেতৃত্বে বহিরাগতরা সিনেট ভবনের তালা ভেঙে সিন্ডিকেটের কাগজপত্র বের করে নিয়ে যায়।’

গতকাল অবৈধভাবে ১৫০ জনকে নিয়োগ দিতে কাগজপত্র তৈরি করা হয়। মূলত এই কাগজপত্র তৈরির স্বার্থেই সিনেট থেকে গোপন নথিপত্র চুরি করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা কাউকে নিয়োগ দেওয়ার বিরোধী নই, কিন্তু প্রচলিত বিধি মোতাবেক স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। 

এ বিষয়ে জানতে এটিএম শাহেদ পারভেজের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্ন সম্বলিত মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আজ সিন্ডিকেট সভা ছিল, আর এই সভার প্রয়োজনে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র থাকা জরুরি, যেগুলো সিনেট ভবনেই থাকে। এজন্যে সিনেট থেকে কাগজপত্র আনা হয়ে থাকতে পারে।

তবে তালা ভেঙে কাগজপত্র আনার ব্যাপারে তিনি জানতেন না উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি অনেক পরে পুলিশের মাধ্যমে জেনেছি, গত রাতে সিনেট থেকে কাগজপত্র সরানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য গেল বছর এক তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমান পায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

তদন্তের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে, সে বছরের ১০ ডিসেম্বর রাবিতে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ কার্যক্রম চালাতে পারেনি। তবে সম্প্রতি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে উপাচার্য আবদুস সোবহান তড়িঘড়ি করে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ।

সেই সঙ্গে, গত রোববার থেকে ‘বড় ধরনের অনিয়মের আশঙ্কায়’ প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবন এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রশাসন ভবন ও সিনেট ভবন তালাবদ্ধ করে রাখে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা–কর্মীরা। উপাচার্য যাতে কোনো ধরনের প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করতে না পারে, সে কারণেই তারা অবস্থান নিয়েছিল বলে জানান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৭ মে চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক আবদুস সোবহান। আগামী ৬ মে তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

রাবি উপাচার্যের এডহক নিয়োগ-বাণিজ্য বন্ধের দাবি শিক্ষকদের

রাবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি

রাবিতে দুর্নীতি-অনিয়ম: ইউজিসি প্রতিবেদন দিলেও সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করছে সরকার

ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন একপেশে ও পক্ষপাতমূলক: রাবি উপাচার্য

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago