টিকা পেতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাড়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশ

ভারত থেকে আমদানি করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দ্রুত শেষ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় কোভিড-১৯ টিকা পেতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাড়ার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ।
প্রতীকী ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দ্রুত শেষ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় কোভিড-১৯ টিকা পেতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাড়ার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘টিকার জন্য আমরা ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টকে লিখেছি। এ বিষয়ে আমরা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দপ্তর ও ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র এই টিকা আমাদের অনুদান হিসেবে দেয়, তাহলে খুব ভালো হয়। আর ‍যদি সেটা না হয়, তাহলে আমরা তা কিনতে তৈরি আছি।’

ওয়াশিংটনের কাছে ব্রিটিশ-সুইডিশ প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান মডার্নার টিকা চেয়েছে ঢাকা।

গত ২৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র জানায়, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অন্য দেশগুলোকে ছয় কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিতে শুরু করবে দেশটি।

বিশ্বজুড়ে যখন ব্যাপক চাহিদার মধ্যে অনেক দেশ টিকার জোগান পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছে, ভারতে রেকর্ডসংখ্যক সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটছে ঠিক তেমনি এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র এ ঘোষণা দিল।

গত কয়েক দিন ধরে ভারতে দৈনিক সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ সংক্রমণের শিকার হচ্ছে। দৈনিক মৃত্যুও হচ্ছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি। এ অবস্থায় দেশটি কোভিড-১৯ এর টিকা রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত তিন কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনতে বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়। এর মধ্যে চুক্তির ৭০ লাখ ডোজ টিকা বুঝে পেয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩২ লাখ ডোজ টিকা।

এই মুহূর্তে মাত্র ১২ লাখ ডোজ টিকার মজুত থাকায় বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে প্রথম ডোজের টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত করেছে। মজুত টিকা কাজে লাগানো হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজের জন্য। কর্মকর্তারা বলছেন, এই মজুত দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার জরুরি ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ও চীনের সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দিয়েছে।

টিকা সংগ্রহের ব্যাপারে মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশেই টিকা উৎপাদনের ব্যাপারে এই দুটি দেশের সঙ্গে কথা বলছে সরকার।

চীন বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ ডোজ সিনোফার্মা টিকা উপহার হিসেবে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যা আগামী ১০ মে’র মধ্যে পৌঁছাতে পারে।

একই সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য থেকেও টিকা জোগাড়ের চেষ্টা করছে। যুক্তরাজ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার উৎপাদন হয়।

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, টিকার জন্য তারা এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, দ্য সেক্রেটারি অব স্টেটের কার্যালয় এবং দেশটির দক্ষিণ এশিয়া ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রীর দপ্তর বরাবর আবেদন জানিয়েছে।

লন্ডনের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ন ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চেয়েছে।

ওই সূত্রের ভাষ্য, ‘যুক্তরাজ্যের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে ভালো। আমরা এখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি। যেন যত দ্রুত সম্ভব টিকা পাওয়া যায়।’

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চেয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভ্যাকসিন সম্পর্কিত মন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চিঠি নথিভুক্ত হয়েছে বলে ভ্যাকসিন সম্পর্কিত মন্ত্রী আমাদের জানিয়েছে। তবে, ভ্যাকসিন রপ্তানি করবে কিনা সে বিষয়ে তারা আমাদের কিছু জানাননি। আমরা তাদের সাড়া পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’

Comments

The Daily Star  | English
30 parties to join Jan 7 polls

30 parties to join Jan 7 polls: EC

Candidates of 30 out of 44 registered political parties have submitted nomination papers for the January 7 national election

2h ago