বরিশাল

হতাশ জেলেরা, জালে উঠছে না ইলিশ

অলস সময় কাটছে ইলিশ ব্যবসায়ীদের। ছবি: টিটু দাস

বরিশাল বিভাগের তিনটি ইলিশ অভয়াশ্রমে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে গিয়েও পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। ফলে, দল নিয়ে প্রায় খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাদের।

জেলেরা জানান, কয়েক বছর ধরে এই সময়ে ইলিশ কম পাওয়া গেলেও এবছর একপ্রকার শূন্য হাতেই ফিরতে হচ্ছে।

বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ইলিশের দোকান। ছবি: টিটু দাস

বরিশাল বিভাগীয় ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি ইসরাইল পণ্ডিত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা মাছ ধরতে গেলেও কোনো মাছ না পেয়ে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে। এর ফলে একেকটি ট্রলারে ৬-১০ জন গিয়ে ৪-৫ দিন থেকে অন্তত ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ করে  ১০ কেজি মাছও পাচ্ছে না।

মেহেন্দীগঞ্জের জেলে আলাউদ্দিন জানান, গত ৩ দিনে মেঘনা  নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে তাদের সাত জনের জেলে দলটি মাত্র ১৫-২০ কেজি মাছ পেয়েছে। যা তাদের নিজেদের খাবারের প্রয়োজনে শেষ হয়ে গেছে। অন্যান্য বছর এই সময়ে নদীতে যতটুকু মাছ পাওয়া যেত এবার তা পাচ্ছেন না।

জেলেরা দাবি করেন, বৃষ্টি কমে যাওয়া ও নদীতে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়াসহ নানা কারণে এটি হতে পারে।

বরিশালের বিভাগে ইলিশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পোর্ট রোড পাইকারি মৎস্য কেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক ইলিশ মাছের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। ইলিশ শ্রমিকরা ক্যারামবোর্ড খেলছে, কেউ কেই তরমুজ বিক্রি করছে। কিছু খুচরা ব্যবসায়ী ২-৩ মণ ইলিশ নিয়ে বসে আছে।

এখানে ইলিশের পাইকারে বিক্রেতা জহিরুল ইসলাম শিকদার জানান,  স্বাভাবিক সময়ে এখানে অন্তত ২০০-৩০০ মণ ইলিশ থাকার কথা, যা এখন ৮০-১০০ মণে নেমে এসেছে।

তিনি জানান, মাছের সরবরাহ না থাকায় মাছের দামও বেড়েছে। গত বছর কেজির মাছ মণ প্রতি ৩৫-৩৮ হাজার টাকা বিক্রি হতো, সেটি এখন ৫৫-৬০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে ৬০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ মাছ বর্তমানে মণপ্রতি ৪৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ২৬-২৮ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এখানে কেজি সাইজের মাছের দাম ১৫০০ টাকার ওপরে বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই সময় এমনিতেই মাছ কম পাওয়ার কথা, তার ওপরে এবারে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়া, পানিতে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াসহ নদীতে ইলিশ আসার উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়নি। এ কারণে হয়তো নদীতে মাছের পরিমাণ কমে আসছে। তবে, বৃষ্টি শুরু হলে এরকম থাকবে না। জুলাই থেকে মাছ বাড়তে শুরু করবে।’

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক আনিসুর রহমান তালুকদার জানান, গত বছরে বরিশাল বিভাগে ৩.৫ লাখ টন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে, এবারে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩.৬ লাখ টন।

তিনি আরও জানান, বিভাগের তিনটি অভয়াশ্রমের ২৭২ কিলোমিটারসহ সারাদেশের ছয়টি অভয়াশ্রমের ৪৩২ কিলোমিটার এলাকা গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ ছিল। এ সময়ে মা ইলিশ রক্ষা ও  জাটকা সংরক্ষণের জন্য বিভাগের ৩ লাখ ৬৩ হাজার ১৯১ জনের মধ্যে ২ লাখ ১ হাজার ৯৭৯ জনকে মাসে ৪০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Step up diplomacy as US tariff clock ticks away

Bangladesh must intensify trade diplomacy to protect garment exports from steep US tariffs as the clock runs down on a three-month reprieve, business leaders warned yesterday.

10h ago