রিয়ালকে বিদায় করে ফাইনালে চেলসি

দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে জিতেছে টমাস টুখেলের শিষ্যরা।
werner
ছবি: টুইটার

ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপার মঞ্চে জায়গা করে নিতে হলে দারুণ কিছু করে দেখাতে হতো রিয়াল মাদ্রিদকে। কিন্তু জিনেদিন জিদানের দলের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তাদের বিবর্ণ পারফরম্যান্সের বিপরীতে চেলসি ছিল দুর্বার। একাধিক সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করলেও জয় ঠিকই তুলে নিল তারা। রিয়ালকে বিদায় করে তারা উঠে গেল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে।

বুধবার রাতে ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে জিতেছে টমাস টুখেলের শিষ্যরা। আগের দেখায় রিয়ালের মাঠে ১-১ ড্র করেছিল তারা। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনালে পা রেখেছে ইংলিশ ক্লাবটি।

প্রথমার্ধে জার্মান ফরোয়ার্ড টিমো ভার্নারের গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে ব্যবধান বাড়ান ইংলিশ উইঙ্গার ম্যাসন মাউন্ট। তবে ক্রসবার বাধা না হয়ে দাঁড়ালে এবং কাই হাভার্টজ, এনগোলো কান্তেরা সুযোগ হাতছাড়া না করলে স্বাগতিকদের জয়ের ব্যবধান অনেক বড় হতে পারত।

পাল্টা আক্রমণ নির্ভর কৌশল বেছে নিয়ে পুরো ম্যাচে আধিপত্য দেখায় চেলসি। বিশেষ করে, বিরতির পর স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়ালকে একেবারে চেপে ধরে তারা। অধিনায়ক সার্জিও রামোস একাদশে ফিরলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম দলটির রক্ষণভাগ ছিল রীতিমতো ছন্নছাড়া। চেলসি আক্রমণ সামাল দেওয়ার উপায় যেন জানা ছিল না তাদের!

মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সময় বল পায়ে রেখেও গোলমুখে ১৫টি শট নেয় ব্লুজরা। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল পাঁচটি। অন্যদিকে, ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের সাতটি শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। কাঙ্ক্ষিত খেলা উপহার দিতে পারেনি লস ব্লাঙ্কোসদের তারকাসমৃদ্ধ মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ডরাও। তাছাড়া, চেলসির গোলরক্ষক এদুয়ার্দো মেন্দি ছিলেন অসাধারণ ছন্দে। মোট পাঁচটি সেভ করেন তিনি।

দুদলই গুছিয়ে উঠতে কিছুটা সময় নেয়। দশম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে রিয়াল। পাসের পর পাস দিয়ে আক্রমণ সাজিয়ে টনি ক্রুসের নেওয়া দূরপাল্লার শট সহজেই রুখে দেন মেন্দি। দুই মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে আন্টোনিও রুডিগারের শট ফিরিয়ে দেন সফরকারীদের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। পরের মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় মাউন্টের ক্রস পা দিয়ে রুখে দেন তিনি।

ছয় মিনিট পর ভার্নার বল জালে পাঠালেও তা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ২৬তম মিনিটে করিম বেনজেমার বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন মেন্দি। গোল হজম থেকে বেঁচে যাওয়ার দুই মিনিট পরই এগিয়ে যায় চেলসি। কান্তের নৈপুণ্যে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পান হাভার্টজ। তার চিপ ক্রসবারে লেগে ফিরলে হেড করে লক্ষ্যভেদ করেন সুযোগসন্ধানী ভার্নার।

৩৫তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের ক্রসে হেড করেন বেনজেমা। তবে তিনি ফাঁকি দিতে পারেননি মেন্দিকে। বিরতির পর খেলা শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে চারবার রক্ষা পায় রিয়াল। ৪৭তম মিনিটে ফের ক্রসবারে আটকে যান হাভার্টজ। যদিও অধিনায়ক সেজার আজপিলিকুয়েতার ক্রসে তার হেডে পরাস্ত হয়েছিলেন কোর্তোয়া।

চার মিনিট পর বেন চিলওয়েলের ক্রসে অভিজ্ঞ থিয়াগো সিলভার হেড লক্ষ্যে থাকেনি। দুই মিনিট পর কোর্তোয়াকে এক পেয়েও মাউন্ট উড়িয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। ৫৯তম মিনিটে তার রক্ষণচেরা পাসে হাভার্টজ পৌঁছে গিয়েছিলেন ব্যবধান বাড়ানোর দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু তার শট বাধা পায় গোলরক্ষকের পায়ে।

৬৪তম মিনিটে চেলসির রক্ষণে ভীতি ছড়ায় সফরকারীরা। এডেন হ্যাজার্ডের কোণাকুণি শট ফাঁকি দিতে পারেনি মেন্দিকে। দুই মিনিট পর কান্তের শট ব্লক করেন বদলি নামা ফেদে ভালভার্দে। তবে চেলসিকে আটকে রাখা যায়নি। ৮৫তম মিনিটে ঠিকই জাল খুঁজে নেয় তারা। নাচো ফার্নান্দেজের কাছ থেকে বল কেড়ে কন্তে খুঁজে নেন বদলি নামা ক্রিস্টিয়ান পুলিসিককে। তিনি বল বাড়ান মাউন্টের উদ্দেশ্যে। বাকিটা অনায়াসে সারেন তিনি।

২০১১-১২ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের টিকিট পেয়েছে চেলসি। ইউরোপ সেরা হওয়ার ‘অল ইংলিশ’ লড়াইয়ে আগামী ২৯ মে ইস্তানবুলে তাদের প্রতিপক্ষ পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। তারা নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার উঠেছে এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago