মানুষের কাছে ফিরে যাওয়া হবে বামপন্থীদের আগামী দিনের বড় কাজ: ঐশী ঘোষ

দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের আলোচিত সাবেক ভিপি ঐশী ঘোষ এবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমানের একটি আসনে সিপিআই (এম) দলের প্রার্থী হয়েছিলেন। ছাত্রদের অধিকার সুরক্ষা ও নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। তবু দমে যাননি ২৬ বছরের এই ছাত্র নেতা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে অংশ নিয়ে তুমুল আলোচনায় থাকা ঐশী ঘোষ কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
ঐশী ঘোষ

দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের আলোচিত সাবেক ভিপি ঐশী ঘোষ এবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমানের একটি আসনে সিপিআই (এম) দলের প্রার্থী হয়েছিলেন। ছাত্রদের অধিকার সুরক্ষা ও নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। তবু দমে যাননি ২৬ বছরের এই ছাত্র নেতা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে অংশ নিয়ে তুমুল আলোচনায় থাকা ঐশী ঘোষ কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর বামপন্থীদের আগামী দিনের লক্ষ্য সম্পর্কে ঐশী ঘোষ বললেন, আগামী দিনে আমাদের বামপন্থীদের সবথেকে বড় কাজ হবে, মানুষের কাছে ফিরে যাওয়া। মানুষের যেসব মৌলিক  চাহিদা— খাদ্য, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সার্বিক নিরাপত্তা, সংখ্যালঘুর অধিকার— এইসব নিয়ে আমরা আন্দোলন গড়ব। মানুষের সামাজিক চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়েই আগামী দিনে আমাদের আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারিত হবে।

তিনি বললেন, রাজনীতিতে দুর্নীতির যে জয়জয়কার, আমাদের লড়াইটা রাজনীতিকে দুর্নীতিমুক্ত করবার লড়াই হিসেবেই তুলে ধরাটা এখন আমাদের সবথেকে বড় রাজনৈতিক কাজ।

সাম্প্রদায়িক শক্তির বাড়বাড়ন্তকে তৃণমূলের জয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ একটু সরিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। তৃণমূল জিতেছে, সরকার গঠন করেছে—এটা যেমন ঠিক, তেমনিই ধর্মান্ধ হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি সত্তরের বেশি আসন পেয়ে বিধানসভায় বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে। বিজেপির এই উত্থানকে অনেকেই খাটো করে দেখছেন। এটাকে খাটো করে দেখা উচিত নয়। ২০১৬ সালের তিনটি আসন থেকে এই যে সত্তরটি আসনে বিজেপির পৌঁছে যাওয়া, তৃণমূলের জয়, ফ্যাসিবাদকে ঠেকানো গেছে এইসব কথার ভেতর দিয়ে বিজেপির এই জয়টাকে এভাবে খাটো করে দেখা একদম উচিত নয় বলে মন্তব্য ঐশী ঘোষের।

তার ভাষায়, আমরা বামপন্থীরা তো হঠাৎ করে ভোটে যাই না। একটা সুনির্দিষ্ট কর্মসূচিকে সামনে রেখে ভোটে যাই। আর ভোটে জিতব, তারপর আমরা মানুষের জন্যে কাজ করব—এটাও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। মানুষের জন্যে কাজ করবার ক্ষেত্রে আমাদের কাছে ভোটে জেতা-হারা কোনো বিষয় নয়।

‘বছরের পর বছর আমরা মানুষের জন্যে কাজ করে এসেছি। ভোটে লড়ার ক্ষেত্রে আমাদের বড় দৃষ্টিভঙ্গি হল, এমন অনেক প্রশাসনিক নীতি আছে, যেগুলোকে আমরা মনে করি মানুষের জীবন জীবিকার ক্ষেত্রে ইতিবাচক নয়। এইসব নীতির বদল করতে পারব, সেগুলিকে জনমুখী করতে পারব—মূলত এই জায়গা থেকেই আমরা ভোটে যাই।’

মানুষের কাছে ফিরে গিয়ে মানুষকে আরও নিবিড় ভাবে বুঝতে চেষ্টা করাটাই আমাদের আগামী দিনের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক কাজ। এই সময়ে দাঁড়িয়ে থেকে কেন আমাদের ভোট দেওয়া উচিত নয় বলে মানুষের মনে হয়েছে, সেটাও রাস্তায় নেমে বোঝাটা আমাদের আগামী দিনের অন্যতম প্রধান কাজ বলে ঐশীর অভিমত।

পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আস্থা ফিরে পেতে বামপন্থীদের করণীয় সম্পর্কে তরুণ নেতা ঐশী বললেন, কমিউনিস্ট পার্টির জন্মলগ্নে বাংলায় দল যেভাবে সামাজিক কাজে একাত্ম ছিল—দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ থেকে শুরু করে বস্তি এলাকায় সান্ধ্য স্কুল—সর্বত্র একটা সামাজিক ভূমিকা পালনের ভেতর দিয়ে যে রাজনৈতিক সাফল্য এসেছিল, সেই পথেই বামদের ফিরে যেতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Labour bill put on the shelf

In an almost unheard-of move, President Mohammed Shahabuddin has sent a labour law amendment back to parliament for reconsideration, expressing concern over the proposed punishment of workers for wrongdoings.

5h ago