বৃদ্ধাশ্রম তৈরির নামে পাহাড় কাটছে বান্দরবান জেলা পরিষদ

বৃদ্ধাশ্রম তৈরির নামে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে।

গত ১৮ এপ্রিল বান্দরবান জেলা প্রশাসন পাহাড় কাটার অপরাধে মাটি কাটার এক ঠিকাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। তবে সেসময় জেলা পরিষদের কাউকে আইনের আওতায় আনা হয়নি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায় বলেন, ‘যেহেতু ঠিকাদার জেলা পরিষদের কথা বলেননি তাই তাকেই জরিমানা করা হয়।’

তবে, ম্যাজিস্ট্রেটের এই ভাষ্য অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার মো. ইয়াছিন। তিনি বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের পাহাড় কাটার পুরো বিষয়টি খুলে বলেছিলাম।’

গতকাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ বিন ইব্রাহিম ভূঞা যে এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে সেই গোদার পাড় পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন ‘জরিমানা করা এখানে স্থায়ী সমাধান না। কীভাবে জেলা পরিষদের এই পাহাড় কাটা থামানো যায় সেটি নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভাবছে।’

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম কাউছার হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রায় এক কোটি টাকার বেশি খরচ করে গোদার পাড় এলাকায় আমরা একটি বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করতে যাচ্ছি।’

‘পাহাড় কাটার জন্য যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে আমরা খুব দ্রুতই অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করছি। বান্দরবান জেলা প্রশাসনকে মৌখিকভাবেও আমরা বিষয়টি জানিয়েছি।’

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. লুৎফুর রহমান বলেন, ‘জেলা পরিষদ যে পাহাড়টি কেটেছে সে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত না তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি।’

বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার বলেন, ‘বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ পাহাড় কাটা বিষয়ে আমাদেরকে কোন কিছুই জানায়নি।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে পাহাড়ধসের ঘটনায় শুধু রাঙ্গামাটিতেই মারা গিয়েছিলেন ১২০ জন। পরের বছর, ২০১৮ সালে ভূমিধসে রাঙ্গামাটিতে ১১ জন ও বান্দরবানে সাত জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বন উজাড়, পাথর উত্তোলন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন থাকলেও উন্নয়নের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিদিন পরিবেশের এই নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

How frequent policy shifts deter firms from going public

If a company gets listed, it will enjoy tax benefits, and this is one of the major incentives for them to go public..However, the government’s frequent policy changes have disheartened listed firms many times, as they faced higher tax rates once they got listed..It gave a clear, nega

2h ago