ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

দূরপাল্লার বাস নেই, ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা

ঈদে ঘরমুখো মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় থেকে কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি ও ঝুঁকি দুটোই বেড়েছে। সচ্ছল-বিত্তবানরা ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করলেও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে।
ঝুঁকি নিয়েই মানুষ ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এলাকা। ১০ মে ২০২০১। ছবি: স্টার

ঈদে ঘরমুখো মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় থেকে কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি ও ঝুঁকি দুটোই বেড়েছে। সচ্ছল-বিত্তবানরা ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করলেও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে।

নিম্ন আয়ের মানুষরা কয়েকজন মিলে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস বা পিকআপ ভাড়া করে, নারী ও শিশুদের নিয়ে মোটরসাইকেলে, খোলা, মিনি বা মালবাহী ট্রাকে গাদাগাদি করে বসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ছুটছেন। সময় ও ভাড়া লাগছে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। তবে, ঈদ-যাত্রায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি কোথাও মানতে দেখা যায়নি।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আজ সকালের দিকে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। তবে, মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো বাস চলছে না।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। ১০ মে ২০২০১। ছবি: স্টার

রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আব্দুল হালিম পরিবার নিয়ে ঈদ করতে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। ‘বাড়ি তো যাব। কিন্তু, সরাসরি কোনো বাস পেলাম না। ঢাকা থেকে লোকাল বাস আর পরে অটোরিকশায় করে ভেঙে ভেঙে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড়ে এসেছি। এখন মোটরসাইকেলে ব্রিজ পাড় হয়ে ওপার থেকে আবার গাড়ি, অটোরিকশা যাই পাই তাতে বাড়ি চলে যাব। সেতু পাড় করে দিতে মোটরসাইকেলে চার শ টাকা দিতে হচ্ছে। বাড়ি যেতে স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণ খরচ হয়ে যাচ্ছে’, বলেন তিনি।

ঢাকায় চাকরি করেন বগুড়ার সাইফুল ইসলাম। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে আমাকে সারাবছর ঢাকায় থাকতে হয়। সাধারণত দুই ঈদের আগে বাড়ি যাই। বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোন আছে। যাওয়ার সময় কষ্টে জমানো টাকা দিয়ে তাদের জন্য কিছু কেনাকাটা করে নিয়ে যাই। তারাও পথ চেয়ে থাকে।’

‘ঢাকায় যে মেসে থাকি, সেখানকার সবাই বাড়ি চলে গেছে। গৃহকর্মীও চলে গেছেন। আমি কীভাবে একা সেখানে থাকব? করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় তো আছেই। তারপরও ঈদে বাড়ি আমাকে যেতেই হবে। তা যত কষ্টই হোক’, যোগ করেন তিনি।

গোরাই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মহাসড়ক ব্যবহার করে যে যেভাবে পারছেন বাড়ি ফিরছেন। সত্যি বলতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার কোনো বালাই নেই। হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক আছে, যাতে সরকারি নির্দেশনা ভঙ্গ করে দূরপাল্লার বাস চলতে না পারে। এ ছাড়াও, ঘরমুখো মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে এবং তথা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অপরাধ প্রতিরোধেও হাইওয়ে পুলিশ সজাগ রয়েছে।’

‘আগামীকাল মঙ্গলবার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো ছুটি দেওয়া শুরু করলে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ আরও বেড়ে যাবে’, বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus's 'Reset Button' call was not about erasing Bangladesh's proud history: CA office

He meant resetting the software, not the hardware created by 1971 Liberation War, statement says

2h ago