স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্প

অপ্রয়োজনে গাছ কাটা হয়ে থাকলে ব্যবস্থা: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজে ৫০টি গাছ কাটা হয়েছে এবং আরও ৫০টি গাছ কাটা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ফাইল ফটো

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজে ৫০টি গাছ কাটা হয়েছে এবং আরও ৫০টি গাছ কাটা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তবে অপ্রয়োজনে গাছ কাটা হয়ে থাকলে যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা জানান।

তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থপতি, উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদদ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে, তারা ওই এলাকা পরিদর্শন করবেন এবং ৫০টি গাছ কাটার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে আমরা বিশেষজ্ঞদের পরিমর্শ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করবো এবং যতটা সম্ভব গাছগুলো বাঁচানোর চেষ্টা করা হবে। এছাড়াও আমরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আরও নতুন এক হাজার গাছ লাগাবো।

তিনি বলেন, সবার উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে নগরপরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবিদ সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে কীভাবে এই প্রকল্প এগিয়ে নেওয়া যার তার সমাধান খোঁজা হবে।

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণের স্বার্থে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে সম্পর্কিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সব ঐতিহাসিক স্থান যথাযোগ্য মর্যাদায় সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

কেন গাছ কাটার আগে গাছ রোপনের কাজ শুরু হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আসছে বর্ষায় গাছ লাগানোর পরিকল্পনা ছিল এবং আগামী এক মাসের মধ্যেই গাছ রোপন শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

জানতে চাওয়া হয় প্রাথমিক নকশায় তো গাছ কাটার কোনো পরিকল্পনা ছিল না--মন্ত্রী জানান, এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে যদি হাঁটার পথের জন্য গাছ কাটা হয়। এটি সরকারের নীতিরও বিরুদ্ধে। তবে যদি নকশা পরিবর্তন করে গাছ রক্ষা করা যেত তবে তারা তাই করতেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা বিষয়টি দেখব এবং গাছগুলোকে না কেটেই যদি হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করার কোনো সুযোগ থাকতো এবং তারপরও যদি তা না করা হয়ে থাকে তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

‘আমি গাছ কাটা দেখিনি, তবে যারা নকশা করেছেন এবং যারা বাস্তবায়ন করছেন তারা এ সম্পর্কে জানেন।’

তিনি বলেন, আমরা নোট নিচ্ছি যদি বিরল কোনো গাছ কাটার আওতায় আসে তবে আমরা তা তদন্ত করবো। কিসের ভিত্তিতে এই গাছ কাটা হচ্ছে এবং সরকারি নকশা অনুসরণ করা হচ্ছে কি না তা দেখা হবে।

মন্ত্রী বলেন, যদি কোনো গাছ অবহেলায় কাটা পরে তবে এর সঙ্গে যারা জড়িত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে স্টেকহোল্ডার ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসবো এবং তাদের পরামর্শ না দেওয়া পর্যন্ত গাছ কাটা স্থগিত থাকবে।

মন্ত্রী জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এ নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে এটি ভাবেননি বলে তারা আগে আলোচনায় বসেননি।

মন্ত্রী বলেন, জনগণের মতামতকে তারা সম্মানের সঙ্গে দেখেন আর এজন্যই তারা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে যাচ্ছেন। এবং প্রয়োজনে নকশাতেও পরিবর্তন আনা হবে। তিনি বলেন, এখানে অহংকারের কোনো বিষয় নেই। দেশের জন্য যা মঙ্গল তাই করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা এখানে শিশুপার্ক অপসারণ করিনি বরং তা উন্নত করছি। শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে সরকারি খরচে প্রতিদিন এখানে ২০০০ শিশুকে নিয়ে ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকা থেকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা আছে।

মন্ত্রী বলেন, ২৬৫ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হঢ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এবং আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এটি চলবে। এখানে নির্মাণ করা হবে সাতটি ফুড কিয়স্ক, ৭ মার্চের ভাষণের স্থানে ২৬ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে, পাকিস্তানি বাহিনী যেখানে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এ আত্মসমর্পণ করেছিল সেখানে ভাস্কর্ষ থাকবে।

এছাড়াও নারী-পুরুষ এবং প্রতিবন্ধীদের শৌচাগার ব্যবস্থা, হাঁটার পথ, মসজিদ, ৫০০ গাড়ির জন্য আন্ডারগ্রাইন্ড পার্কিং এবং ওয়াটার ফাউন্টেইন থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago