ঈদ আনন্দ আসেনি ব্রহ্মপুত্রের চরবাসীর ঘরে

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রপাড়ে ছেলের সঙ্গে থাকেন আহেদা বেওয়া। বয়স ষাটের ঘর পার হলেও অভাবের সংসারে স্বস্তি আনতে এখনো দিনমজুরের কাজ করেন। ছেলে আতোয়ার আলী কাজ করেন চায়ের দোকানে। ঈদের সকালে আহেদার ঘুম ভাঙে নাতি-নাতনির কান্নার শব্দে। নতুন পোশাক না পেয়ে দুই নাতি ও এক নাতনি সকাল থেকে কাঁদছে।
Lalmonirhat_Char_14May21.jpg
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রপাড়ে বাসিন্দা আহেদা বেওয়া। ছবিটি আজ শুক্রবার সকালে তোলা। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রপাড়ে ছেলের সঙ্গে থাকেন আহেদা বেওয়া। বয়স ষাটের ঘর পার হলেও অভাবের সংসারে স্বস্তি আনতে এখনো দিনমজুরের কাজ করেন। ছেলে আতোয়ার আলী কাজ করেন চায়ের দোকানে। ঈদের সকালে আহেদার ঘুম ভাঙে নাতি-নাতনির কান্নার শব্দে। নতুন পোশাক না পেয়ে দুই নাতি ও এক নাতনি সকাল থেকে কাঁদছে।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিধিনিষেধ আসার পর থেকে আতোয়ার আলীর আয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদের দিনে সেমাই চিনিও কিনতে পারেননি তিনি। সংসার চালাচ্ছেন ধার-দেনা করে।

আজ শুক্রবার সকালে সেই কষ্টের কথা জানালেন আহেদা বেওয়া। শরীর ভালো না থাকায় তিনি মাঠে কাজ করতে পারছেন না। গত বছরও ঈদুল ফিতরে তাদের ভাগ্যে নতুন পোশাক জোটেনি।

আহেদা বেওয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঈদ আছে কিন্তু হামারগুলার ঈদ নাই। নয়া জামা কাপড় হামার ভাগ্যে জোটে নাই। ঈদের দিনোত হামরা খামো কী তার কোনো ঠিক নাই।’

Lalmonirhat_Char1_14May21.jpg
ঈদের সকালে আহেদার ঘুম ভাঙে নাতি-নাতনির কান্নার শব্দে। নতুন পোশাক না পেয়ে সকাল থেকেই তারা কাঁদছে। ছবি: স্টার

এ চিত্র চর যাত্রাপুরের প্রতিটি ঘরের।

আতোয়ার আলী ডেইলি স্টারকে জানান, সংসার চালাতে গিয়ে ইতোমধ্যে অনেক ঋণ করে ফেলেছেন। তাই ঈদে আর নতুন করে ঋণ চাওয়ার সাহস পাননি। ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) প্রকল্প থেকে ৪৫০ টাকা পেয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে চাল, ডাল ও তরকারি কিনেছেন।

পাশের গ্রাম চর পার্বতীর বাসিন্দা মনসুর আলী। রিকশা চালিয়ে চলে তার সংসার। করোনা সংক্রমণে তার আয় কমে গেছে। ঈদ উপলক্ষে বাড়তি কিছুই করতে পারেননি। তার সংসারে স্ত্রী, তিন সন্তান ও বৃদ্ধা মা রয়েছেন।

মনসুর আলী ডেইলি স্টারকে জানান, গত বছর ঈদুল ফিতরের আগে সরকারি সহায়তা পেয়েছিলেন, এ বছর পাননি। ঈদ এক বিষণ্ন সকাল নিয়ে এসেছে।

একই কথা বলেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্রপাড়ের চর মনতলার বাসিন্দা আহমেদ আলী।

‘ঈদ আছে কিন্তু চরবাসির জন্য নাই। চরের অধিকাংশ মানুষ ঈদে কোনো আয়োজন করতে পারেনি। সাধারণ অন্য দিনের মতোই কাটছে। কারো ঘরে খাবার নেই, কারো পরিবারে আছে নতুন পোশাক না পাওয়ার বেদনা। গত বছরও এ রকমই কেটেছে’— বলেন আলী।

তিনি আরও বলেন, ‘চরের অনেকে রিকশা চালিয়ে, ভাতের হোটেল ও চায়ের দোকানে শ্রমিককের কাজ করে সংসার চালায়। লকডাউনে তাদের আয় কমে গেছে, অনেকে বেকার হয়ে বাড়িতে বসে আছে। প্রতিটা ঘরে অভাব দিন দিন বাড়ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago