১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষেও বুড়িমারীতে আটকে আছেন ৪৪ স্কুল শিক্ষার্থী
লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর ও কাস্টমস চেকপয়েন্টে একটি আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থেকে ঈদ করলেন ভারত থেকে আসা ৪৪ শিক্ষার্থী। তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন স্কুলে পড়াশুনা করছেন।
এসব শিক্ষার্থীর কেউ কেউ ১৭ দিন, কেউ ১৫ দিন আবার কেউ ১৪ দিন ধরে কোয়ারেন্টিনে আছেন। তাদের আভিযোগ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হলেও এখনো কোনো রেজাল্ট নেই।
ভারতের দার্জিলিংয়ের সেনমাই স্কুলে পড়াশোনা করা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী চট্রগ্রামের আবরার ইয়াসির সাংবাদিকদের কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, ‘১৭ দিন ধরে একটি আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছি। করোনা টেস্টের জন্য স্যাম্পল নেওয়া হয়েছে কিন্তু এখনো কোনো রেজাল্ট নেই। এখানে আর ভালো লাগছে না। আমি সুস্থ আছি। কবে আমি বাড়িতে ফিরতে পারব জানি না।’
সন্তানের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকও এই আবাসিক হোটেলে উঠেছেন।
এক শিক্ষার্থীর বাবা নুরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি তার ছেলেকে নিতে বুড়িমারী স্থলবন্দর ও কাস্টম চেকপোস্টে আসেন। তার ছেলের সঙ্গে তিনিও ১৪ দিন ধরে একটি আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছেন। করোনা পরীক্ষায় তাদের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হলেও এখনো রেজাল্ট পান নি।
‘এভাবে আবাসিক হোটেলে থাকতে থাকতে মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে,’ তিনি জানান।
বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুন আমীন বাবুল জানান, ভারত থেকে আসা শিক্ষার্থীসহ ৯১ জন বাংলাদেশি নাগরিক যারা বুড়িমারীতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন।
করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ থেকে ভারতের সকল সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় ভারতের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করা শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশিরা আটকে যান ভারতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকাসহ নানা শর্তে তারা দেশে প্রবেশের অনুমতি পান। তাদের সব রকম খেয়াল রাখা হচ্ছে, বলেও জানান তিনি।
পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আজ শনিবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুড়িমারী ও পাটগ্রামে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে থাকা ৫ শিক্ষার্থীর করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে এবং তাদের দ্রুত কোয়ারেন্টিন মুক্ত করা হবে। বাকিদের টেস্ট রেজাল্ট শিগগির তাদের কাছে আসবে বলে তিনি জানান।
Comments