করোনার দুঃসময়ে কুলাউড়ার বেদেপল্লী

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার এলাকার বেদে পল্লীতে ছুঁয়ে যায়নি ঈদ আনন্দ। ছবি: স্টার

‘মানুষ নিয়ে আমাদের কাজ, আমাদের জীবিকা। করোনায় সেই মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে। সাপ খেলা দেখাতে কারও বাড়িতে যাওয়া তো দূরের কথা, রাস্তা-ঘাটেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হচ্ছে’— কথাগুলো বলছিলেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার এলাকার বেদে সম্প্রদায়ের মো. ইলিয়াস।

তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অনেক পেশায় আয় কমে গেছে। বেদে সম্প্রদায়ের আয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক মাস ধরে প্রত্যেক ঘরেই খাবার সংকট। এর মধ্যে এলো ঈদ। কিন্তু ঈদের আনন্দ ছুঁতে পারলো না।’

ব্রাহ্মণবাজার সিএনজি পাম্পের বিপরীতে বসবাস করেন ৩০টি বেদে পরিবার। তাদের অধিকাংশই মুসলিম। প্রতিটি পরিবারে সদস্য সংখ্যা পাঁচ থেকে সাত জন।

হালিমা বেগম বলেন, ‘আমাদের এতোই দুর্ভাগ্য ঈদে ছেলে-মেয়েদের কোনো জামা-কাপড় কিতে দিতে পারিনি। সেমাই-মাংস তো দূরের কথা। ডাল-ভাত খেয়েই কেটেছে ঈদ। আমাদের কোনো জায়গা-জমি নেই। ভাসমান মানুষের মতো থাকি, সরকারি সহযোগিতা পাই না।’

সাপের খেলা দেখানো একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। ঔষধী গাছ, পাথর, আংটি, তাবিজ বিক্রি করাও কঠিন হয়ে গেছে। আয় প্রায় বন্ধ বললেই চলে বলেন— বিল্লাল হোসেন। গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি আরও বলেন, ‘কোনো বাড়িতে গেলে করোনার ভয়ে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। অধিকাংশ দিনই অলস সময় কেটে যাচ্ছে।’

আশ্বাস পেলেও কোনো সহযোগিতা পাননি বলে জানান সদে বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী নাই। কাজ নাই, ঘরে খাবার নাই। রোজায় সেহরি-ইফতারেও খাবার কষ্ট হয়েছে। কেউ সাহায্য করে না। কয়েক বার ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গেছে, নামের তালিকা করে নিয়ে গেছে, বিকাশ নাম্বার নিয়েছে কিন্তু সাহায্য আসেনি। এভাবে আর কত দিন!’

Comments

The Daily Star  | English

Netanyahu says Israel close to meeting its goals in Iran

JD Vance says US at war with Iran's nuclear programme, not Iran

20h ago