ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে: জুলাই থেকেই টোল আদায় শুরু হচ্ছে না

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখন পর্যন্ত প্রস্তুত হয়নি। এ অবস্থায় চলতি বছরের জুলাই থেকে এই এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল আদায় শুরু করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
Expressway
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। স্টার ফাইল ফটো/ পলাশ খান

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখন পর্যন্ত প্রস্তুত হয়নি। এ অবস্থায় চলতি বছরের জুলাই থেকে এই এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল আদায় শুরু করার  সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী বছরের জুন মাসে বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর টোল আদায়ের এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

কর্মকর্তাদের ভাষ্য, টোল আদায়ের জন্য নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের আগ পর্যন্ত আগামী জুলাই থেকে দুই ধলেশ্বরী সেতুর টোল আদায় করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। কারণ জুনে এই কাজে নিয়োজিত বর্তমান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে।

গত ১১ মে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ সংক্রান্ত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগের মাসেই এই এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রস্তাবিত টোলের হার (কিলোমিটার প্রতি ১০টাকা) অনুমোদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

নির্ধারিত হার অনুসারে একটা মাঝারি ট্রাককে পদ্মা সেতুসহ ৫৫ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ে পাড়ি দেওয়ার জন্য মোট ৫৫০ টাকা টোল দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যাত্রীবাহী বাসের টোল হবে ৪৯৫ টাকা ও ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য ১৩৮ টাকা।

এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ থাকবে চারটি। যানবাহনের টোল আদায় করা হবে বের হওয়ার পথে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী সভায় জাতীয় মহাসড়কগুলোতে চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন।

গত বছরের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর এই কার্যক্রমে গতি আসে।

এর আগে সওজ পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর এখন পর্যন্ত তারা পদ্মা সেতুর জন্য টোলের হার চূড়ান্ত করতে পারেনি।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সওজ আগামী জুলাই থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়।

নতুন অগ্রগতি

গত ১১ মে অনুষ্ঠিত সভায় সড়ক পরিবহন সচিব নজরুল ইসলাম টোল আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ার কারণে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

তখন সওজ কর্মকর্তারা সভায় জানান, এই কাজের জন্য বরাদ্দ ৫০০কোটি টাকা এখন পর্যন্ত  ছাড় হয়নি। ফলে তারা সেটা ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিতে পারেননি।

সভাসূত্রে জানা যায়, এ অবস্থায় সভায় প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়ের জন্য  অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সওজ কর্মকর্তারা সভায় আরও বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। যদিও এক্সপ্রেসওয়ের পাচচর এলাকার গোলচত্ত্বরের কাজ শেষ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

একই সঙ্গে সভায় দুই ধলেশ্বরী সেতু থেকে টোল আদায়ের ব্যাপারে সওজ কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনার অনুমোদন দেওয়া হয়।

সূত্র বলছে, এই কাজে মহাসড়ক বিভাগ আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিকে কর্মী নিয়োগ করবে। যার জন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে।

সওজের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুর গত ১১ মে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হ্যাঁ, নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের আগ পর্যন্ত আগামী জুলাই থেকে আমরা নিজেদের উদ্যোগেই এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের কাজ করব।’

ঠিক কবে থেকে পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজ শুরু হতে পারে-এমন প্রশ্নের জবাবে সবুর বলেন, ‘প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় সেই তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।’

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এর মধ্যে পদ্মা সেতুর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনকে নিযুক্ত করেছে।  সভায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায়ের জন্য একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করার সভায় মতামত দেওয়া হয়।

২০১৬ সালের মে মাসে সরকার ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দুই লেনের ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার এই প্রকল্পটি হাতে নেয়। এ জন্য খরচ ধরা হয় ছয় হাজার ২৫২ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের এপ্রিলে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।

পরে এক্সপ্রেসওয়ের জন্য আরেকটি প্রকল্প নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে খরচ দাঁড়ায় ১১ হাজার ৩ কোটি টাকা। যা এটাকে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সড়কে ( সড়ক নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি খরচের হিসাবে) পরিণত করেছে।

সওজ কর্মকর্তারা বলছেন, এখনও এক্সপ্রেসওয়ের কিছু কাজ বাকি আছে।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago