সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি এমজেএফসহ ৫ সংগঠনের

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের শিগগির মুক্তি, তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ), নারীপক্ষ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
আজ বুধবার সংগঠনগুলো এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে। এমজেএফ'র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
এমজেএফ'র সিনিয়র সমন্বয়কারী শাহানা হুদা সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, 'মামলার বিবৃতি অনুযায়ী রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৮০ ধারার ৩৭৯ ও ৪১১ এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।'
'যদি বিদ্যমান আইনে তার বিচার করতে হয়, তবে তিনি যে "গুপ্তচর" এবং সরকারি নথিপত্র অন্য কোনো দেশে পাচারের অভিপ্রায় প্রমাণ করতে হবে। এটা প্রমাণ করতে পারলে এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ,' যোগ করেন তিনি।
শাহানার মতে, জনগণের অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তথ্য জানার অধিকার থাকতে হবে এবং সব রাষ্ট্রীয় তথ্যকে 'গোপনীয়' হিসেবে শ্রেণিকরণ করা উচিত না।
তিনি বলেন, 'যদিও চীন-রাশিয়ার সঙ্গে ভ্যাকসিন চুক্তি একটি গোপন দলিল। তবে, সাংবাদিকরা সেই তথ্য জানার বা ছবি তোলার অধিকার রাখে।'
সংবাদ সম্মেলনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক নীনা গোস্বামী রোজিনার গ্রেপ্তার ও জামিন প্রত্যাখ্যানের নিন্দা জানিয়ে ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, 'তাকে হয়রানি করতেই ১০০ বছরের পুরনো আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে।'
রোজিনার জামিন আবেদনের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনডব্লিউএলএ'র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, 'আদালতের উচিত ছিল তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করা। একজন নারী এবং সন্তানের মা হিসেবে তার সে অধিকার আছে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যের অধিকার আছে এবং বিশেষ করে মহামারি চলাকালে আমরা সবাই গণমাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য খুঁজি। এটি সরকারকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং একটি মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরি করতে সাহায্য করে।'
সালমা আলী এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে যারা রোজিনাকে লাঞ্ছিত করার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের শাস্তির দাবি জানান।
নারীপক্ষের সেক্রেটারি তামান্না খান বলেন, 'রোজিনা সরকারের দুর্নীতি প্রকাশ করতে কাজ করেছিলেন। এ জন্য প্রতিশোধ নিতেই তার বিরুদ্ধে এসব ঘটানো হয়েছে।'
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অনারারি ডিরেকটর অ্যাডভোকেট সারা হোসেন এ সম্মেলনে যোগ দিয়ে রোজিনার জামিন প্রত্যাখ্যান, গ্রেপ্তারের ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র তদন্তের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, 'বর্তমান তদন্ত কমিটিকে নিরপেক্ষ বলা যায় না। কারণ তারা ইতিমধ্যে ধরে নিয়েছে যে রোজিনা অপরাধী।'
Comments