চাঁদপুরে ‘চা শ্রমিক গণহত্যা’ রাষ্ট্রীয় দিবসের স্বীকৃতি চায় উদীচী

Chandpur.jpg
চাঁদপুরের বড়স্টেশন এলাকায় অসংখ্য চা-শ্রমিককে হত্যার দিনটিকে রাষ্ট্রীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানায় উদীচী। ছবি: স্টার

১৯২১ সালের এই দিনে চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন এলাকায় অসংখ্য চা-শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই নির্মম গণহত্যার ১০০ বছর উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে চাঁদপুরের সেই স্থানেই বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চাঁদপুর শাখা ‘চা শ্রমিক গণহত্যা দিবস’ পালন করেছে।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চাঁদপুর শাখার সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, মুজিবুর রহমান, বাসুদেব মজুমদার, ৭১-এর শব্দ সৈনিক কৃষ্ণা সাহা, মুজিবুর রহমান, সাংবাদিক এম আর ইসলাম বাবু, তরুণ কবি ও লেখক রফিকুজ্জানান রনি এবং জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি প্রণব ঘোষ প্রমুখ।

বক্তারা এই দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ১৯২১ সালের মে মাসে চা শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পণ্ডিত দেওসরণের নেতৃত্বে ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার চা শ্রমিক। কিন্তু বাগান মালিকের যোগসাজশে ব্রিটিশ সরকার রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। উপায় না পেয়ে প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক রেললাইন ধরেই হাঁটতে শুরু করেন চাঁদপুর স্টিমারঘাটের উদ্দেশে। ১৭ দিনে এই দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে ২০ মে চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে পৌঁছান শ্রমিকরা। পথে অনাহারে বহু শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। এই বিপুল সংখ্যক অভুক্ত আর ক্লান্ত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান চাঁদপুরের মহাত্মা গান্ধি নামে পরিচিত সর্বভারতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হরদয়াল নাগ। তিনি স্থানীয়দের সহায়তায় চা শ্রমিকদের জন্য চিড়া-মিঠাইসহ শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেন।

ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশে স্থানীয় কমিশনার কিরণ চন্দ্র দে, ম্যাজিস্ট্রেট সুশীল সিং এবং মালিকপক্ষের প্রতিনিধি ফার্গুসনের নেতৃত্বে চাঁদপুরে অবস্থান নেয় ব্রিটিশদের প্রতিষ্ঠিত আসাম রাইফেলসের গোর্খা বাহিনী।

তারা চাঁদপুর রেলস্টেশন থেকে স্টিমার ঘাটে অবস্থানরত ক্লান্ত-ক্ষুধার্ত শ্রমিককে ওপর শুরু করে পৈশাচিক নির্যাতন। তারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে হাজার হাজার চা শ্রমিককে হত্যা করে। পরে তাদের পেট কেটে মেঘনায় ভাসিয়ে দেয়। যাতে করে বিপুল সংখ্যক মরদেহ পানিতে ভেসে না উঠে এবং আন্তর্জাতিক মহলে এই গণহত্যার কথা প্রকাশ না পায়।

২০০৮ সাল থেকে ২০ মে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন।

Comments

The Daily Star  | English

Sohag’s murder exposes a society numbed by fear and brutality

It was a murder that stunned the nation, not only for its barbarity, but for what it revealed about the society we have become.

13m ago