‘ওসমান গণী মারা যাননি’
চুয়াডাঙ্গায় করোনায় আক্রান্ত এক জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে সমালোচনা মুখে পড়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। একদিন পর ঘটনাটি জানাজানি হলে তথ্যসূচি সংশোধন করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই ঘটনায় শোকজ করা হয়েছে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহান আলীকে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর গ্রামের মৃত কলিম উদ্দীন সর্দারের ছেলে ওসমান গণী (৫৮) জ্বর, ঠান্ডাজনিত রোগে ভোগার এক পর্যায়ে চিকিৎসকের পরামর্শে ১১ মে করোনা পরীক্ষার জন্যে নমুনা দেন। ১২ মে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে তার করোনা পজিটিভ আসে। তাকে নিজ বাড়িতেই কোয়ারেন্টিন করা হয়।
পরে শারীরিক কারণে ১৩ মে ওসমানকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডের ৬০৭ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
তবে, দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ ওসমান ১৩ মে করোনায় মারা গেছেন উল্লেখ করে ১৮ মে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে প্রতিবেদন পাঠায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাঠানো প্রতিবেদন ধরে জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গায় জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০ জন হিসাব করে নথিবদ্ধ করে। অন্যদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওসমানকে করোনায় মৃত দেখিয়ে সংবাদ প্রচার করে।
বিষয়টি ওসমানের পরিবারের নজরে আসে। ওসমান গণীর ছেলে সাব্বির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাবা মারা যাননি। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে আমরা হতবাক হয়ে গেছি।’
‘আমিই হাসপাতালে বাবার দেখাশোনা করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের সঠিক তদারকি ও উদাসীনতার কারণেই এমনটি হয়েছে। বাবা এখন বেশ সুস্থ। দু-একদিনের ভেতর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেবে’, বলেন তিনি।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহান আলী যাচাই-বাছাই না করে কোনো অনুমতি বা সই না নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে ওই তথ্য পাঠিয়েছিলেন। বিষয়টি জানার পর অবশ্য রিপোর্টটি সংশোধন করা হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই ঘটনায় পরিসংখ্যানবিদ শাহাজাহান আলী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
Comments