দ্রুততম সময়ে রোজিনার জামিন ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ৮৩ নাগরিকের বিবৃতি

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় গ্রেপ্তারকৃত প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের দ্রুততম সময়ে জামিন ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৮৩ জন নাগরিক।
আদালতে নেওয়া হচ্ছে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে। ছবি: সংগৃহীত

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় গ্রেপ্তারকৃত প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের দ্রুততম সময়ে জামিন ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৮৩ জন নাগরিক।

বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ২০ মে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় গ্রেপ্তারকৃত প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু, দীর্ঘ শুনানির পর আদালত তাকে জামিন দেননি এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য আগামী ২৩ মে তারিখ নির্ধারণ করেন। রোজিনাকে জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আদালতের এই বিলম্ব আমাদেরকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। 

গত ১৭ মে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মনগড়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে জ্যেষ্ঠ নারী সাংবাদিক রোজিনাকে গ্রেপ্তারের পর দেশ ও বিদেশে এ বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া হয়। সাংবাদিক সমাজ, নাগরিক সমাজ এমনকি সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকেও রোজিনার গ্রেপ্তারকে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং তা সরকারকে বিব্রত করেছে বলে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘও এ গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে এবং বিদেশি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাগুলোতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে, যা স্বাধীন সাংবাদিকতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের বিকাশের ক্ষেত্রে দেশ ও সরকারের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এমন পরিস্থিতিতে ২০ মে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদন শুনানির দিন ধার্য ছিল এবং সঙ্গত কারণেই নাগরিক সমাজসহ সবাই আশা করেছিল যে ঘটনার সংবেদনশীলতা, নাগরিকের জামিন পাওয়ার অধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে দৃঢ়তা প্রদর্শন করে সেদিনই তার জামিন দেওয়া হবে। রোজিনার বিরুদ্ধে আইনের যে সব ধারায় মামলা করা হয়েছে তার প্রতিটিই জামিনযোগ্য। রোজিনা জামিন পেলে এ মামলার পরবর্তী শুনানিতে কোন রকমের জটিলতা সৃষ্টি হত না। তারপরেও তাকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করা হয়েছে যা আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করি। 

নাগরিক সমাজ সব হস্তক্ষেপের ঊর্ধ্বে থেকে, কালবিলম্ব না করে সাংবাদিক রোজিনাকে আগামী রবিবার জামিন দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।

আমরা সরকারের কাছে অবিলম্বে এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার, রোজিনার নি:শর্ত মুক্তি ও তার ওপর নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনারও জোর দাবি করছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন: শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সুলতানা কামাল, হাফিজ উদ্দিন খান, রাশেদা কে. চৌধুরী, ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, জেড আই খান পান্না, সারা হোসেন, নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশী কবির, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আলী  রীয়াজ, অধ্যাপক স্বপন আদনান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, ড. আসিফ নজরুল, গীতি আরা নাসরীন, রোবায়েত ফেরদৌস, ড. সামিনা লুৎফা, ড. তানজিম উদ্দিন খান, ড. শাহনাজ হুদা, ড. সুমাইয়া খায়ের, জোবায়েদা নাসরিন, কাজী মারুফুল ইসলাম, ড. গোবিন্দ চক্রবত্তী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আনু মুহাম্মদ, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ড. নাসরিন খন্দকার ও সায়েমা খাতুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম ও ড. সাদাফ নূর, গবেষক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা ও ড. নোভা আহমেদ, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, অধ্যাপক আকমল হোসেন, এশিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মাহফুজা খানম, মানবাধিকার কর্মী শারমীন মুরশিদ, শিরিন হক, সঞ্জীব দ্রং, পল্লব চাকমা, ড. ফষ্টিনা পেরেরা, অরূপ রাহী, মুক্তশ্রী চাকমা সাথী, নূর খান লিটন, রেহনুমা আহমেদ, ইলিরা দেওয়ান, সুব্রত চৌধুরী, ইজাজুল ইসলাম, হানা শামস আহমেদ, রেজাউর রহমান লেলিন, অ্যাডভোকেট সালমা আলী, অধ্যাপক ড. সেলিম জাহান, কবি শামীম আজাদ, গবেষক ড. বিনা ডি কস্টা, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, আইনজীবী তবারক হোসেইন, লেখক পার্সা সাজিদ, নৃত্যশিল্পী লুবনা মরিয়ম, ডা. নায়লা জেড খান, সাংবাদিক ড. সায়দিয়া গুলরুখ, অধিকারকর্মী ফওজিয়া খন্দকার, লেখক কাজী সুফিয়া আখতার, সাংবাদিক সুস্মিতা প্রিথা, ফিলিপ গাইন, সমাজ সংগঠক রেজানুর রহমান, শিল্পী কনক চাকমা, মাহবুবুর রহমান, তায়েবা বেগম লিপি, শিমুল সাহা, চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমেদ সিমন, সারা আফরিন, সাংবাদিক নাসিমুন আরা হক মিনু, লেখক রোজিনা বেগম, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago