এল সালভাদরে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে ২৪ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার
এল সালভাদরে এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ির বাগানে কমপক্ষে ২৪ জনের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে। কর্মকর্তারা জানান, সেখানে প্রায় ৪০টির মতো মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তাদের বেশিরভাগই নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, সাবেক ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম হুগো আর্নেস্তো ওসোরিয়ো শ্যাভেজ (৫১)। চলতি মাসে ৫৭ বছরের এক নারী ও তার ২৬ বছরের মেয়েকে হত্যার অভিযোগে ওই কর্মকর্তাকে চালচুয়াপা শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মা-মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এর আগেও, তার বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত হয়েছিল।
হত্যার অভিযোগ স্বীকারের পর ফরেনসিক দল রাজধানী সান সালভাদর থেকে প্রায় ৪৮ মাইল উত্তরে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কমপক্ষে সাতটি গর্ত আবিষ্কার করে। গর্ত খুঁড়ে সেখানে বেশ কয়েকটি মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্যে কয়েকজনকে দু’বছর আগে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
সবগুলো মরদেহ উদ্ধার করতে আরও এক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসিকিউটর জানিয়েছে, উদ্ধার করা মরদেহগুলোর মধ্যে দুই, সাত ও নয় বছরের মেয়ে শিশুও রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে, গত এক দশক ধরে দেশটিতে কোনো গোপন খুনি চক্র সক্রিয় আছে। মরদেহগুলো উদ্ধার করে অনুসন্ধান চালালে গোপন খুনিচক্রের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে।
এল সালভাদরের পুলিশ প্রধান মৌরিসিও আরিয়াজা জানান, এই ঘটনায় অন্তত ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক পুলিশ ও সেনা সদস্য এবং মানবপাচারকারী।
স্থানীয় লা প্রেনসা পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওসারিও শ্যাভেজ গত এক দশক ধরে মানুষ হত্যা করেছেন।
পুলিশ প্রধান মৌরিসিও আরিয়াজার বরাতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, ওসারিও শ্যাভেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের খুঁজে বের করতেন। আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হতো।
বৃহস্পতিবার সাদা স্যুট পরিহিত ফরেনসিক কর্মীরা মাটি থেকে কঙ্কাল উদ্ধারের সময় বাড়ির বাইরে কয়েক ডজন মানুষ জড়ো হন। তারা নিখোঁজ স্বজনদের মরদেহ খুঁজতে সেখানে যান।
লাতিন আমেরিকার মধ্যে ফেমিসাইডের সর্বোচ্চ হার এল সালভাদরে। লিঙ্গজনিত কারণে নারী বা মেয়েদের হত্যাকে ফেমিসাইড বলে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এল সালভাদরে গত বছর ৭০ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছেন। ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ১১১ জন।
সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর মতে, করোনাভাইরাস মহামারিতে লাতিন আমেরিকায় ফেমিসাইড ও নারীদের প্রতি সহিংসতা আরও বেড়েছে।
Comments