চরাঞ্চলে কমেছে কাউনের আবাদ
আশানুরূপ ফলন ও দাম না পাওয়ায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ ২৬টি নদ-নদীর চরাঞ্চলে কমেছে কাউনের আবাদ। এক যুগ আগেও এসব চরাঞ্চলে কাউনের আবাদ ছিল পরিপূর্ণ।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর চরাঞ্চলে কাউন আবাদ হয়েছে ৬১০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছর ছিলে ৮২০ হেক্টর। এক যুগ আগে এ ফসল আবাদ হয়েছিল সাত হাজার হেক্টর জমিতে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর লালমনিরহাটের চরাঞ্চলে কাউন আবাদ হয়েছে ১৬ হেক্টর জমিতে। কিন্তু, গত বছর এর পরিমাণ ছিল ১২৫ হেক্টর। এক যুগ আগে কাউন আবাদ হয়েছিল তিন হাজার হেক্টর জমিতে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নতুন নতুন ফসল চাষ এবং আশানুরূপ ফলন ও লাভজনক হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা পুরাতন ফসলের চাষ থেকে বিরত থাকছেন। অনেকে দীর্ঘদিন থেকে চাষাবাদ করায় শুধু তারাই কাউনের আবাদ ধরে রেখেছেন। কাউনের আবাদ নিয়ে বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে আগামী এক যুগ পর কাউনের চাষ হয়তো চোখে পড়বে না।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ব্রহ্মপুত্র নদের চর যাত্রাপুর এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত বছর তিনি ছয় বিঘা জমিতে কাউন আবাদ করেছিলেন। আর এবছর করেছেন মাত্র দুই বিঘা জমিতে। কাউনের আবাদে খরচ কম, কিন্তু ফলনও কম। তাছাড়া কাউন বিক্রিতে আগের মতো বাজার সুবিধা মিলছে না।
তিনি আরও জানান, এক বিঘা জমি থেকে ৩-৪ মণ কাউন উৎপাদন হয়, খরচ হয় ২০০০-২৫০০ টাকা। প্রতি মণ কাউন বিক্রি করতে হয় ১৬০০-১৭০০ টাকা দরে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তিস্তা নদীর চর গোবর্ধান এলাকার কৃষক মতি মিয়া (৬৬) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আগে তিনি ৮-১০ বিঘা জমিতে কাউন আবাদ করতেন। এখন এ ফসলের আবাদ ছেড়ে দিয়েছেন। কাউনের পরিবর্তে তিনি ভুট্টা ও মিষ্টি কুমড়া চাষ করছেন।
চরাঞ্চল থেকে কাউনের চাষ প্রায় উঠেই যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ বলেন, ‘কৃষকরা যে ফসল চাষ করে লাভবান হবেন তারা সেদিকে ঝুঁকে থাকেন। কাউনের চেয়ে অন্য ফসলের আবাদ করে লাভবান হওয়ায় কাউনের আবাদ অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন।’
Comments