শেষের ঝড় না আসায় ২০ রানের ঘাটতি

Mushfiqur Rahim
ছবি:ফিরোজ আহমেদ

তামিম ইকবালের ফিফটির পর মাঝপথে বিপদে পড়া বাংলাদেশ মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। এক পর্যায়ে ২৭০ ছাড়িয়ে যাওয়া ছিল খুবই সম্ভব। কিন্তু স্লগ ওভারে কার্যকর ঝড় না আসায় থেকে গেল অন্তত ২০ রানের ঘাটতি।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে  ৬ উইকেটে  ২৫৭ রান করেছে বাংলাদেশ। অথচ ৪০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১৯৩। এমন ভাল অবস্থা থেকে শেষ ১০ ওভারে এসেছে কেবল ৬৪ রান। উইকেট বলছে এই রান তাড়া করা খুবই সম্ভব।।

দলের হয়ে ৮৭ বলে সর্বোচ্চ ৮৪ করেছেন মুশফিক। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেমে মন্থর খেলা মাহমুদউল্লাহ ৭৬ বলে করেন ৫৪। অধিনায়ক তামিম ৭০ বলে থামেন ৫২ রানে।

বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। অফ স্পিন দিয়ে ৪৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

দুপুরে টস জিতে খেলতে নেমেই বিপর্যয়। দুশমন্ত চামিরার বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন লিটন দাস। এমন চেষ্টায় বিপদ আসায় স্বাভাবিক। হলোও তাই। স্লিপে সহজ ক্যাচ গেল কোন রান না করা লিটনের।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর তিনে নেমে সাকিব ছিলেন বেশ জড়োসড়ো। থিতু হতে সময় নেন অনেক। শুরুতে দ্রুত উইকেট পড়তে দেখে গুটিয়ে যান তামিমও। সময় বাড়ায় তিনি কিছু রান বের করলেও সংগ্রাম করতে থাকেন সাকিব।  দুজনের জুটি জমলেও স্কোর বোর্ড খুব একটা চলছিল না। ১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলে ৪০ রান।

তাতে সাকিবের অবদান ছিল ৩২ বলে ১৪! রান বের করতে না পারায় চাপ বাড়ছিল প্রচুর। ১৩তম ওভারে গিয়ে সেই চাপ সরাতে দানুশকা গুনাথিলেকাকে উড়াতে গিয়েছিলেন। লং অন পার করতে পারেননি। আউট হন ৩৩ বলে ১৫ রান করে। ৪৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

চারে নামা মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে পরে পরিস্থিতি সামলাতে থাকেন অধিনায়ক তামিম। মন্থর খেললেও উইকেটে টিকে থাকায় সব পুষিয়ে দেওয়ার সুযোগ ছিল তার।

শ্রীলঙ্কানরা আক্রমণে দুই কব্জির বোলার ওয়েইন্দু হাসারাঙ্গা আর লাকসান সান্দাকানকে এনে সুবিধা তুলতে চেয়েছিল। শুরুতে তারা ভোগাচ্ছিলেনও। কিন্তু এই দুজনের আলগা কিছু বল রানের চাকা ফের সচল করে দেয় বাংলাদেশের।

৬৫ বলে পঞ্চাশ পেরিয়ে যান তামিম। কিন্তু আরও একবার ইনিংস বড় করতে না পারার দায় পড়ল তার ঘাড়ে। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেওয়ার পাশাপাশি রিভিউও নষ্ট করে বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরেন ৭০ বলে ৫২ রান করে।

মোহাম্মদ মিঠুন পরের বলেই আউট। ক্রিজে এসেই স্কুপ করতে গিয়ে ব্যাটে নিতে না পেরে তিনিও এলবডিব্লিউ। পর পর দুই উইকেটের সঙ্গে দুটি রিভিউও হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা।

২৮০ রানের পূঁজির আশা তখনই হয়ে যায় ফিকে। ক্রিজে নামার পর থেকেই মুশফিক অবশ্য ছিলেন সাবলীল। ডট বলে চাপ বাড়াননি তিনি। ৫২ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় তুলে নেন ফিফটি। ছয়ে নেমে মাহমুদউল্লাহ পরিস্থিতির চাপে থিতু হতে সময় নিচ্ছিলেন। মুশফিক তখন চালু রাখেন রানরেট।

মাহমুদউল্লাহও পরে পেয়ে যান ছন্দ। দুজনে মিলে আসে দারুণ এক জুটি। বিপদে পড়া দল পায় স্বস্তি। সুইপ, পুলে মুশফিক ঘন ঘন গ্যাপ বের করছিলেন। বাউন্ডারি পেতেও অসুবিধা হচ্ছিল না। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১১৭ বলে জুটিতে তারা আনেন ১০০ রান।

মুশফিক দিচ্ছিলেন অষ্টম সেঞ্চুরির আভাস। কিন্তু সান্দাকানকে রিভার্স সুইপ মারতে গিয়ে ৮৪ করে আউট হয়ে যান তিনি। ৮৭ বলের ইনিংসে ৪ বাউন্ডারি, ১ ছক্কা আসে তার ব্যাট। অর্থাৎ ক্রিজে প্রচুর এক-দুই রান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহ শুরুতে মন্থর খেলে পরে দ্রুত পুষিয়ে নিয়েছিলেন,৪০ ওভারের পর আবার তিনি হয়ে যান দৃষ্টিকটু রকমের মন্থর। শেষ পর্যন্ত দলের চাহিদা মেটাতে না পেরে ৪৮তম ওভারে গিয়ে বোল্ড হন তিনি।

সাতে নামা আফিফ হোসেনকে খুব সড়গড় দেখায়নি। একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে শেষ পর্যন্ত  ২২ বলে ২৭ করেছেন মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা বাঁহাতি। আটে নেমে ৯ বলে ১৩ করে শেষ ওভার কিছুটা পুষিয়ে দিয়ে যান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫৭/৬   (তামিম ৫২, লিটন ০ , সাকিব ১৫, মুশফিক ৮৪  , মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ৫৪ , আফিফ ২৭* , সাইফুদ্দিন ১৩*;  উদানা  ০/৬৪ , চামিরা ১/৩৯ , ধনঞ্জয়া ৩/৪৫ , গুনাথিলেকা ১/৫, হাসারাঙ্গা ০/৪৮, সান্দাকান ১/৫৫) 

 

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

8h ago