তৃতীয় হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেই লিভারপুল
মৌসুমের শুরুতেই দলের সেরা তিনজন সেন্টার ডিফেন্ডার ইনজুরিতে। তখন থেকেই ধুঁকতে থাকে দলটি। এক সময়ে পয়েন্ট তালিকার সেরা ১০ থেকেও ছিটকে যায়। অনেকেই ভেবেছিলেন আগামী মৌসুমে হয়তো ইউরোপা লিগে জায়গা করে নেওয়াও কঠিন হয়ে যাবে দলটির জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই লিভারপুল তৃতীয় হয়েই জায়গা করে নিয়েছে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
অ্যানফিল্ডে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেয় লিভারপুল। অন্যদিকে ঘরের মাঠে টটেনহ্যাম হটস্পার্সের বিপক্ষে দুই দফা এগিয়ে থেকেও ৪-২ গোলের ব্যবধানে হেরে সেরা চারের লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে লেস্টার সিটি। অপর ম্যাচে অ্যাস্টন ভিলার কাছে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরেও চতুর্থ হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা পেয়েছে চেলসি।
৩৮ ম্যাচে ২০ জয় ও ৯ ড্রয়ে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে আসর শেষ করে লিভারপুল। ১৯ জয় ও ৯ ড্রয়ে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ হয়েছে চেলসি। ২০ জয় ও ৬ ড্রয়ে পঞ্চম হওয়া লেস্টারের পয়েন্ট ৬৬। আগে শিরোপা নিশ্চিত করা ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ৮৬।
অথচ শিরোপা লড়াই শেষ হয়ে গেছে আগেই। এমনকি রানার্স আপও। নির্ধারিত হয়ে গেছে অবনমনের তিনটি দলও। তবুও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ দিনেই সবার চোখ ছিল। তার ওই একই কারণ কারা যাচ্ছে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে। তাই শেষ দিনের লড়াই ছিল জমজমাট।
তবে দুর্ভাগ্য এফএ কাপ চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটির। জেমি ভার্ডির দুটি পেনাল্টি গোলে দুই দফা এগিয়েও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় তাদের। তাতে আগামী মৌসুমে ইউরোপা লিগে খেলেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে দলটিকে। ভাগ্য সঙ্গ দেয় চেলসিকে। হেরেও জায়গা পায় সেরা চারে। তবে এদিন বাদ পরলেও তাদের সুযোগ ছিল। কারণ কদিন পরই চলতি আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে লড়বে দলটি। সে লড়াইয়ে জিতলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাধেই আগামী মৌসুমে জায়গা পেত ব্লুজরা।
ঘরের মাঠে এদিন ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে খেলা গোছাতে পারেনি লিভারপুল। এ সময়ে একটি গোল হজমও করতে পারতো দলটি। গোলরক্ষক অ্যালিসনকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন টাউনসেন্ড। কিন্তু লক্ষ্যেই শট নিতে না পারলে সে যাত্রা বেঁচে যায় তারা। তবে এরপর ধীরে ধীরে খেলা গুছিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। এরমধ্যে বেশ কিছু সহজ সুযোগও মিস করে দলটি। তবে ৩৬তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পায় দলটি।
কর্নার থেকে উড়ে আসা বল হেড নিয়েছিলেন রিস উইলিয়ামস। বল রবার্তো ফিরমিনোর পায়ে লেগে চলে আসে ফাঁকায় থাকা সাদিও মানের কাছে। আলতো টোকায় বল জালে জড়ান এ সেনেগাল তারকা। দ্বিতীয় গোলটিও আসে তার পা থেকেই। ৭৪তম মিনিটে মোহামেদ সালাহর কাছ থেকে বল পেয়ে দেখে শুনে সময় নিয়ে দারুণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
দলীয় লড়াইয়ে জিতলেও ব্যক্তিগত লড়াইয়ে এদিন হেরে গেছেন সালাহ। শেষ দিনের আগে ২২ গোল নিয়ে টটেনহ্যামের হ্যারি কেইনের সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াইয়ে ছিলেন এ মিশরীয় তারকা। কিন্তু কেইন গোল পেলেও পাননি সালাহ।
তিন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এদিন সবার আগে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়েছিল লেস্টারই। প্রথমার্ধের ১৮তম মিনিটেই ভার্ডির পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় দলটি। তবে প্রথমার্ধের নির্ধারিত খেলা শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে কেইন গোল করে সমতা ফেরান। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ৫২তম মিনিটে ফের আরও একটি স্পটকিক থেকে দলকে এগিয়ে দেন ভার্ডি। কিন্তু ৭৬তম মিনিটে সতীর্থ গোলরক্ষক কেস্পার স্মাইকেলের আত্মঘাতী গোলে সমতা ফেরায় স্পার্স। এরপর বদলী নেমে জাদু দেখান গ্যারেথ বেল। নয় মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করলে শেষ হয়ে যায় লেস্টারের সব আশা।
অপর ম্যাচে ম্যাচের শুরু থেকেই এক চেটিয়া দাপট দেখিয়ে খেলতে থাকে চেলসি। তবে পাল্টা আক্রমণে মাঝেমধ্যেই ভীতি ছড়াতে থাকে অ্যাস্টন। প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোলও পেয়ে যায় দলটি। ম্যাট টার্গেটের কর্নার অরক্ষিত অবস্থায় পেয়ে যান বেনট্রান্ড ট্রাউরে। তার শট বারপোস্টে লেগে জড়ায়। দ্বিতীয়ার্ধের সাত মিনিট যেতেই এল গাজীর সফল স্পটকিক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি। ৭০তম মিনিটে বেন চিলওয়েল একটি গোল পেলেও হার এড়াতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনলিস্ট দলটি।
Comments