বারডেমে মৃত এক রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন: সন্দেহ চিকিৎসকদের

রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিন দিন আগে মারা যাওয়া এক রোগী মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আক্রান্ত অপর একজন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিন দিন আগে মারা যাওয়া এক রোগী মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আক্রান্ত অপর একজন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বারডেম হাসপাতালের রেসপাইটেরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘তিন দিন আগে মারা যাওয়া ৬৫ বছর বয়সী ওই রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। নিশ্চিত হতে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’

বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেও আক্রান্ত ছিলেন।

অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন জানান, মৃত ওই রোগীর অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও কিডনিজনিত সমস্যা ছিল। তবে তিনি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।

ভর্তি থাকা অপর রোগী সম্পর্কে তিনি বলেন, তাকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে এবং তার অবস্থা খুব বেশি গুরুতর নয়।

এ বিষয়ে এবং এই রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধটিও ব্যয়বহুল বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ইতোমধ্যে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

৪৫ বছর বয়সী প্রথম রোগী দেশে শনাক্ত হয় গত ৮ মে এবং ৬৫ বছর বয়সী অপরজন শনাক্ত হয় ২৩ মে।

অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন জানান, ৪৫ বছর বয়সী অপর রোগী এখন বারডেমে চিকিৎসা নিচ্ছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মতে, মিউকরমাইসিটিস ছত্রাক থেকে মিউকরমাইকোসিস হয়ে থাকে। এটি বাতাসের চেয়ে মাটিতে এবং শীত ও বসন্তকালের চেয়ে গ্রীষ্ম ও শরৎকালে বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন এই আণুবীক্ষণিক ছত্রাকের স্পোরের সংস্পর্শে আসে। সুতরাং এর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব।

তবে, বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এই ছত্রাক ক্ষতিকর নয়। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাদের শরীরে মিউকরমাইসিটিসের স্পোর প্রবেশ করলে ফুসফুস ও সাইনাস আক্রান্ত হতে পারে। যা পরে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে।

সিডিসি’র মতে, এই বিরল ছত্রাকে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৫০ শতাংশ। তবে, ৯২৯টি ঘটনা নিয়ে করা ২০০৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে মৃত্যুহার ৫৪ শতাংশ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সব বয়সী মানুষের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি না থাকায় এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই।

তারা আরও জানান, কোভিড-১৯ ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী, যারা স্টেরয়েড নিচ্ছেন, ক্যান্সার আক্রান্ত অথবা যারা অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন, তারা সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই নয়, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কারণেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভারতের স্বাস্থ্যখাতে নতুন হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গত রোববার জানান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় তারা খুব শিগগিরই একটি নীতিমালা তৈরি করবেন।

 

আরও পড়ুন: 

দেশে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ শনাক্ত

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago