হাতিয়ায় ৭ ফুট উঁচু জোয়ারের পানি

বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে, পানিবন্দি অন্তত ৫ হাজার
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়। ছবিটি নোয়াখালীর হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে নোয়াখালীর হাতিয়ার পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দুইটি ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী মো. নাছির উদ্দিন জানান, ইয়াসের প্রভাবে হাতিয়ার মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬-৭ ফুট উঁচু হয়ে জোয়ার এসেছে এর ফলে তমরউদ্দিন ও সোনাদিয়া ইউনিয়নে কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ উপচে পড়ে ও ভেঙ্গে গিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ দুই একদিনের মধ্যে শুরু হবে।

মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে এ জোয়ার শুরু হয়ে ৩টা পর্যন্ত চলে। জোয়ারের পানির উচ্চতা ৬-৭ ফুট উঁচু হওয়ায় দ্বীপাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

তমরউদ্দীর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ জানান, তার ইউনিয়নের ১, ৪, ৫ ও ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম খিরুদিয়া, কোরালিয়া, পশ্চিম জোরখালি, তমরুদ্দী গ্রামে জোয়ারের তোড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকেছে। এতে করে মাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০০ মানুষ।

সোনাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নরুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের চরচাঙ্গা ও মাইজচরা গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে খামারের মাছ।

চরকিং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মহি উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, তার ইউনিয়ন এর চর বগুড়া, শুল্লুকিয়া ও বোয়ালিয়া গ্রাম দুপুর ১২টার দিকে ৪-৫ ফুট উঁচু জোয়ারের পানি তলিয়ে গেছে। এতে মাছ ভেসে গেছে। অন্যদিকে নলচিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বলেন তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। জোয়ারের ফরাজি গ্রাম, কলা পাড়া, হাবিল মিয়া, তুফানিয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, শুখচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়ন এর ১নং ওয়ার্ডে লালচরে ৬-৭ ফুট উঁচু জোয়ার পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মো. মেহেরাজ উদ্দিনও জানান, বেলা ১১টা থেকে শুরু জোয়ারে তার ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে মরিচসহ আউস ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে শতাধিক মৎস্য খামারের মাছ। এছাড়াও হরনি এবং চানন্দী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলায় দুযোর্গপূর্ন আবহাওয়া বিরাজ করছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. খোরশেদ আলম খান বলেন হাতিয়ার সবকটি ইউনিয়নে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য ৯ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি নজর রাখছে।

Comments

The Daily Star  | English

Produce 10 ex-ministers, 2 advisers to Hasina before tribunal on Nov 18: ICT

They will be shown arrested in case filed over crimes against humanity, genocide, says prosecutor

28m ago