টাইব্রেকারে ইউনাইটেডকে হারিয়ে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন ভিয়ারিয়াল
জেরার্দ মোরেনো প্রথমার্ধে ভিয়ারিয়ালকে এগিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরালেন এদিনসন কাভানি। নির্ধারিত সময়ের বাকিটায় হলো না গোল। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও জালের ঠিকানা কেউ খুঁজে না পাওয়ায় ম্যাচ গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে নায়ক বনে গেলেন জেরোনিমো রুলি। এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের নৈপুণ্যে প্রথমবারের মতো ইউরোপা লিগের ফাইনালে ওঠা ভিয়ারিয়াল পেল শিরোপার স্বাদ।
বুধবার রাতে পোল্যান্ডের গাডেন্সকে পেনাল্টি শ্যুটআউটে গড়ানো রোমাঞ্চকর ফাইনালে ১১-১০ গোলে জিতেছে উনাই এমেরির দল। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়।
টাইব্রেকারে দুই দলের খেলোয়াড়রা ১০টি করে শট নিয়ে প্রতিটিতে লক্ষ্যভেদ করেন। ১১তম স্পট-কিক নেওয়ার দায়িত্ব তাই পড়ে গোলরক্ষকদের কাঁধে। নিজে জাল খুঁজে নেওয়ার পর ইউনাইটেডের গোলরক্ষক দাভিদ দে গেয়ার শট রুখে দেন রুলি। তাতে ইংল্যান্ডের সফলতম দল ইউনাইটেডকে হারিয়ে উল্লাসে মাতে ভিয়ারিয়াল। ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা জায়গা করে নিয়েছে আগামী মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে।
স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়ালের ৯৮ বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো বড় শিরোপা। চতুর্থবারের মতো ইউরোপা লিগ জিতেছেন তাদের কোচ এমেরি। এর আগে সেভিয়াকে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন তিনি (২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬)।
প্রথমার্ধে বল দখলে আধিপত্যের পাশাপাশি ভিয়ারিয়ালের রক্ষণে চাপ ধরে রাখে ইউনাইটেড। কিন্তু তারা নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। রক্ষণ জমাট রাখার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা-আক্রমণে বারবার ইউনাইটেডের গোলমুখে ভীতি ছড়ায় ভিয়ারিয়াল।
উজ্জীবিত শুরু করা ইউনাইটেড সপ্তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণটি করে। মার্কাস র্যাশফোর্ডের কাছ থেকে বল পেয়ে স্কট ম্যাকটমিনের নেওয়া শট লক্ষ্যে থাকেনি। আট মিনিট পর দানি পারেহোর কর্নার থেকে মানু ত্রিগেরস নেন ভলি। তা পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি ইউনাইটেডের গোলরক্ষক দাভিদ দে গেয়াকেকে।
২০তম মিনিটে লুক শ জোরালো শট নেন গোলপোস্ট বরাবর। তা মাঠের বাইরে চলে যায় অনেক দূর দিয়ে। ডি-বক্সে থাকা ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের কেউ পা ছোঁয়াতে পারলে অবশ্য বিপদ ঘটতে পারত ভিয়ারিয়ালের। তিন মিনিট পর সুযোগ পায় তারা। কার্লোস বাক্কার র্যাবোনা কিকে পাউ তোরেসের হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
২৯তম মিনিটে ছন্দে থাকা মোরেনোর লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় ভিয়ারিয়াল। ইউনাইটেডের কাভানি নিজেদের ডি-বক্সের বাইরে পারেহোকে ফাউল করলে রেফারি বাজান ফ্রি-কিকের বাঁশি। এরপর সুবিধাজনক অবস্থান থেকে পারেহোর সেট পিসে পা ছুঁইয়ে ডে গেয়াকে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড মোরেনো।
বিরতির পর তেতে ওঠে ওল গানার সুলশারের ইউনাইটেড। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। বিপরীতে ভিয়ারিয়াল বেছে নেয় রক্ষণাত্মক কৌশল। তবে শেষদিকে এমেরি বেশ কিছু খেলোয়াড় বদল করলে তারা আবার লড়াইয়ে ফেরে।
৫৫তম মিনিটে গোল শোধ করে রেড ডেভিলসরা। র্যাশফোর্ডের ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট ম্যাকটমিনের পায়ে লেগে সৌভাগ্যক্রমে পড়ে কাভানির সামনে। রুলিকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। অফসাইডের আপিল করেছিল ভিয়ারিয়াল। রেফারি ভিএআরের সাহায্য নেওয়ার পর তাদের আবেদন বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচের বাকি সময়ে দুই দলই বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু গোল হয়নি। ইউনাইটেডের কাভানি-র্যাশফোর্ড-ব্রুনো ফার্নান্দেসের প্রচেষ্টা যেমন আলোর মুখ দেখেনি, তেমনি ভিয়ারিয়ালের পাকো আলকাসের-আলবার্তো মোরেনোরাও লক্ষ্য খুঁজে পাননি। ফলে টাইব্রেকারে নির্ধারিত হয় শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের ফল।
Comments