গার্দিওলার সিটি নাকি টুখেলের চেলসি, কারা জিতবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ?

ম্যানচেস্টার সিটি নাকি চেলসি? অসাধারণ একটি যাত্রার শেষে কারা হাসবে শেষ হাসি? কাদের হাতে উঠবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০২০-২১ মৌসুমের শিরোপা?
ম্যান সিটি এবারই প্রথম উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। তাদের সামনে রয়েছে ২৩তম ক্লাব হিসেবে ইউরোপের সেরা হওয়ার হাতছানি। আর সাবেক চ্যাম্পিয়ন চেলসির এটি তৃতীয় ফাইনাল। ২০১১-১২ মৌসুমে শিরোপা জেতার আগে ২০০৭-০৮ মৌসুমে রানার্স-আপ হয়েছিল তারা।
দুই ইংলিশ ক্লাবে তারকা খেলোয়াড়ের ছড়াছড়ি। সিটির কেভিন ডি ব্রুইন, রিয়াদ মাহরেজ, রুবেন দিয়াস, ফিল ফোডেন, সার্জিও আগুয়েরোদের যোগ্য জবাব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন চেলসির এনগোলো কান্তে, থিয়াগো সিলভা, কাই হাভার্টজ, ম্যাসন মাউন্ট, টিমো ভার্নাররা। তবে এবার বাড়তি নজর থাকছে তাদের কোচদের দিকে। একদিকে স্প্যানিশ পেপ গার্দিওলা, অন্যদিকে তার গুণমুগ্ধ জার্মান টমাস টুখেল। উদ্ভাবনী ক্ষমতা আর কৌশলের নতুনত্বে প্রতিপক্ষকে চমকে দিয়ে ফল নিজেদের পক্ষে আনতে দুজনের জুড়ি মেলা ভার।
গত জানুয়ারিতে চেলসির দায়িত্ব নেওয়ার আগে মুখোমুখি লড়াইয়ে গার্দিওলার সঙ্গে পেরে উঠছিলেন না টুখেল। তিনি হেরেছিলেন পাঁচ লড়াইয়ের চারটিতেই। তবে চেলসিতে যোগ দিয়েই যেন রহস্যের সমাধান করে ফেলেছেন তিনি! সবশেষ দুই দেখায় তার চেলসি যথাক্রমে ১-০ ও ২-১ গোলে হারিয়েছে ম্যান সিটিকে।
দুদলই আক্রমণে দাপট দেখানোর পাশাপাশি রক্ষণ জমাট রেখে পেয়েছে সাফল্য। ফাইনালে ওঠার পথে সিটিজেনরা হারিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, পিএসজির মতো ক্লাবকে। চেলসিকেও পাড়ি দিতে হয়েছে কঠিন পথ। অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদকে পরাস্ত করার পাশপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফলতম দল রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় করেছে তারা।
Manchester City vs Chelsea: who to support in the Champions League final #UCL | #UCLfinal
— UEFA Champions League (@ChampionsLeague) May 28, 2021
এবারের আসরের শুরু থেকেই অদম্য ছন্দে আছে ম্যান সিটি। এখন পর্যন্ত খেলা ১২ ম্যাচের ১১টিতেই জিতেছে তারা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক মৌসুমে এতগুলো ম্যাচ জেতার রেকর্ড নেই ইংল্যান্ডের আর কোনো দলের। বাকিটি তারা করেছে ড্র। নিজেরা ২৫ গোল করার বিপরীতে হজম করেছে কেবল ৪ গোল।
চলতি মৌসুমে নিজেদের ১২ ম্যাচের আটটিতে জিতেছে চেলসি। তিনটিতে ব্লুজরা ড্র করেছে। তাদের একমাত্র হারটি ছিল কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে এফসি পোর্তোর সঙ্গে। প্রতিপক্ষের জালে তারা বল পাঠিয়েছে ২২ বার। তাদের জালে বল ঢুকেছে মাত্র চারবার।
শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের আগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশাবাদ জানিয়েছেন সিটির কোচ গার্দিওলা, ‘এখানে (ফাইনালে) থাকায় আমি বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ। এটা একটা বিশেষ ব্যাপার। এটা সম্মানের। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং যথাসাধ্য চেষ্টা করব। আমাদের যা করতে হবে তা হলো, নিজেদের কাছে সৎ থেকে খেলায় জিততে চেষ্টা করা।’
গার্দিওলার বার্সেলোনার হয়ে দুবার (২০০৮-০৯ ও ২০১০-১১) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার অভিজ্ঞতা আছে। এক দশক পর আবার যখন তিনি ফাইনালের মঞ্চে, তখন টুখেল আছেন এই প্রতিযোগিতায় নিজের প্রথম শিরোপার খোঁজে। গতবার পিএসজিকে ফাইনালে তুললেও বায়ার্ন মিউনিখের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল তার।
প্রতিপক্ষকে সমীহ করলেও চেলসির কোচ টুখেলের কণ্ঠে পাওয়া গেছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যয়, ‘শৈশবে আপনি এই ম্যাচগুলোর স্বপ্ন দেখতেন এবং এটা ছিল চাঁদ দেখার মতো... অনেক অনেক দূরের ব্যাপার। আমি বলতে দ্বিধা করি না যে, এই মৌসুমে ও গত মৌসুমে যথাক্রমে ম্যান সিটি ও বায়ার্ন ইউরোপের (সেরা দলগুলোর) মানদণ্ড। আমরা (তাদের সঙ্গে) দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি এবং আশার ব্যাপারটি হলো, ফুটবলে ৯০ মিনিটের মধ্যে আপনি দূরত্বের অবসান ঘটাতে পারেন।’
সুখী গার্দিওলাকে পাওয়া যাবে ফাইনাল শেষেও নাকি দূরত্ব মিটিয়ে ফেলবেন টুখেল? প্রশ্নের উত্তর জানতে বিশ্বের অগণিত ফুটবলপ্রেমীকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না। পোর্তোর ড্রাগন স্টেডিয়ামে গার্দিওলার ম্যান সিটি ও টুখেলের চেলসি মুখোমুখি হচ্ছে শনিবার। ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত একটায়।
Comments