টিকটকে সক্রিয় আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্র: পুলিশ
সামাজিক মাধ্যম টিকটক ও ফেসবুকে সক্রিয় একটি আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু অপরাধী মিলে এই সংঘবদ্ধ চক্রটি গড়ে তুলেছে।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ আজ ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অনুসন্ধানে নেমে এই চক্রের খোঁজ পায় পুলিশ। ভাইরাল ভিডিওটির ঘটনায় জড়িত সব বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে পুলিশ জানিয়েছে।
উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ জানান, চক্রটির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েসহ বিবাহিত গৃহিণী পর্যন্ত সবাই এ চক্রের টার্গেট।
পাচারকারীদের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মূলত টিকটক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে তরুণ-তরুণীরা পাস্পরিকভাবে পরিচিত হয়ে একটি ফেসবুক গ্রুপে সংযুক্ত হয়। ফেসবুক গ্রুপটির মূল পৃষ্ঠপোষক ওই আন্তর্জাতিক পাচার চক্রটি। এই গ্রুপের অ্যাডমিনের তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষের দিকে ঢাকার পাশের একটি জেলায় অবস্থিত একটি রিসোর্টে ৭০০/৮০০ জন তরুণ-তরুণী পুল পার্টিতে অংশগ্রহণ করে। এই গ্রুপে কিছু সদস্য আছে, যারা গ্রুপের নারী সদস্যদের ভারতের বিভিন্ন মার্কেট, সুপার শপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই চক্রের মূল আস্তানা ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়। মূলত দেহ ব্যবসার উদ্দেশ্যেই মেয়েদেরকে ভারতে পাচার করা হয়। এই চক্রটি কয়েকটি রাজ্যের কিছু হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। সেই হোটেলগুলোতে পাচার করা নারীদের সরবরাহ করা হয় বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।’
তিনি জানান, পাচার করে নারীদের ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুরায় নিয়ে গিয়ে কৌশলে মাদকদ্রব্য সেবন করিয়ে বা জোর পূর্বক বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে এই চক্রের সদস্যরা। পালানোর চেষ্টা করলে এই ভিডিও তাদের স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
তরুণীকে ধর্ষণ-নির্যাতন: বেঙ্গালুরু থেকে ৫ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ
Comments