সাতক্ষীরা জেলাকে লকডাউনের প্রস্তাব বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুলনা বিভাগের ভারত সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা জেলাকে লকডাউনের আওতায় আনার প্রস্তাব দিতে বলেছে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ রোববার খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই জরুরি বৈঠক শেষে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি জানান।
ডা. রাশেদা সুলতানা জানান, স্ব স্ব জেলার সিভিল সার্জনরা জেলার করোনা প্রতিরোধ কমিটিতে এ প্রস্তাব উপস্থাপন করে পাশ করবেন। প্রতিটি জেলাতেই সরকার নির্ধারিত একটি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি আছে।
তিনি বলেন, ‘খুলনা বিভাগের পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত অন্য যে কোনো বা রাজশাহী বিভাগের চেয়ে অনেক ভালো। তবে, ভারতের অবস্থা বিবেচনায় সীমান্ত সংলগ্ন ছয় জেলাকে ঝুকিপূর্ণ ধরা হয়েছে।’
তিনি জানান, আজকের বৈঠকে সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর এবং কুষ্টিয়া জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচন হয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা জেলার করোনা সংত্রমণের হার (২২.২২ শতাংশ) বেশি হওয়ায় লকডাউনের প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে গড় শনাক্তের হার ১৩ থেকে ১৭ শতাংশ।
আজকের সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও খুলনা বিভাগের সিভিল সার্জনরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে আরও ১০৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা জানান।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন- খুলনায় দু’জন, সাতক্ষীরায় একজন, চুয়াডাঙ্গার একজন এবং মেহেরপুরের একজন।
গত বছরের ১৯ মার্চ খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায়। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ২৯ মে সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৫৩ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩৩ জনে। এছাড়া, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩১ হাজার ২০৩ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিভাগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে আছে। এ পর্যন্ত খুলনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১১৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭২ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯ হজার ১০৫ জন। এছাড়া বাগেরহাটে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫১৩ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৪০৬ জন। সাতক্ষীরায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫৩৫ জন এবং মারা গেছেন ৪৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ৩১৫ জন। যশোরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৩০ জন, মারা গেছেন ৭৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৭৮ জন। নড়াইলে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৮৬৮ জন, মারা গেছেন ২৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হজার ৮১৫ জন। মাগুরায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৫৩ জন, মারা গেছেন ২৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৮৯ জন। ঝিনাইদহে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৯৮ জন, মারা গেছেন ৫৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হজার ৭২৬ জন। কুষ্টিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৯০০ জন, মারা গেছেন ১১০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ২৩৫ জন। চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৯৫৬ জন, মারা গেছেন ৬০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮১১ জন। আক্রান্তের দিক দিয়ে সর্বনিম্নে আছে মেহেরপুর জেলা। এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৬ জন। মারা গেছেন ২২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৮৩৫ জন।
Comments