শেষ রক্ষা হচ্ছে না বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর

শেষ রক্ষা হচ্ছে না বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। টানা ১২ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর তার বিদায়ের আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
Benjamin Netanyahu
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

শেষ রক্ষা হচ্ছে না বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। টানা ১২ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর তার বিদায়ের আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এতদিন নেতানিয়াহু কট্টরপন্থি দলগুলোর সমর্থন নিয়ে ছলে-বলে-কৌশলে দেশ শাসন করলেও মাত্র একটি উগ্র ডানপন্থি দলের সমর্থন হারানোয় তার দীর্ঘ শাসনের অবসান হতে চলেছে।

বিশ্লেষকরা প্রথমে তাকে ইসরায়েলের রাজনীতিতে ‘অপ্রতিরোধ্য’ মনে করলেও এখন তাকে আর তেমনটি ভাবা হচ্ছে না। গত দুই বছরে দেশটিতে একটি সরকার গঠনের জন্যে চারবার জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু, কোনবারই নেতানিয়াহুর দল সরকার গঠনের মতো জনসমর্থন পাননি। তবুও, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু ক্ষমতায় টিকে থাকার সব চেষ্টাই করেছেন।

সম্প্রতি, গাজায় নৃশংস সামরিক হামলাকে তার ক্ষমতায় টিকে থাকার কৌশল হিসেবে মনে করেছেন বিশ্লেষকরা। শত শত নিরীহ মানুষের রক্তে হাত ভিজিয়েও নেতানিয়াহু এখন নিজেকে রক্ষা করতে পারছেন না।

টানা ১২ বছর ৫৬ দিন থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির এই নেতা। এর আগেও তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব করেছেন ১৫ বছর ৭৪ দিন।

এক সময় বিশ্লেষকরা বলতেন, কট্টরপন্থি নেতানিয়াহু ছাড়া ইসরায়েলের কথা ভাবা যায় না। কিন্তু, এখন দেখা যাচ্ছে নেতানিয়াহুকে ছাড়াই নতুন সরকার পেতে যাচ্ছে ইসরায়েল।

গতকাল সোমবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর বিরোধীরা এক জোট হওয়ায় তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

প্রতিবেদন মতে, ডানপন্থি ছোট দল ইয়ামিনার নেতা নাফতালি বেনেট নেতানিয়াহু-বিরোধী মধ্যপন্থি ইয়েশ আতিদ দলের নেতা ইয়ার লাপিদের জোটে যোগ দিতে রাজি হওয়ায় লিকুদ পার্টির শাসনের অবসান হতে পারে।

গতকাল সন্ধ্যায় নাফতালি নতুন জোট সরকারে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে নেতানিয়াহু সরকারের পতনের আভাস স্পষ্ট হয়েছে।

এ ঘটনাকে ইসরায়েলের রাজনীতিতে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে নতুন সরকার গঠিত হলে নেতানিয়াহুর দীর্ঘ ১২ বছরের শাসনের অবসান হবে।

গতকাল নাফতালি বলেছেন, ইসরায়েলে গত দুই বছরের মধ্যে পঞ্চম দফা জাতীয় নির্বাচন এড়াতে ও ‘ঘূর্ণিপাক থেকে দেশকে রক্ষা করতে’ তিনি নেতানিয়াহুবিরোধী নতুন সরকারে যোগ দিতে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘চার দফা নির্বাচনের পর জনগণের কাছে এটা স্পষ্ট যে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ডানপন্থি সরকার ইসরায়েলে সম্ভব নয়। এখন আমাদের হয় পঞ্চম দফা নির্বাচনের দিকে যেতে হবে নয়তো একটি ঐক্যমত্যের সরকার গঠন করতে হবে।’

সিএনএন’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মাত্র সাতটি আসনে জয়ী হয়ে নাফতালি এখন ইসরায়েলে ‘কিং মেকার’ হয়ে উঠেছেন। তার দল নেতানিয়াহুবিরোধী জোটে যোগ দিলে জোটটি সরকার গঠনের জন্যে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে প্রয়োজনীয় ৬১ আসনের কাছাকাছি চলে আসবে। এ কারণে সব পক্ষ থেকেই নাফতালির সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।

নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশটির ডান, বাম ও মধ্যপন্থিরা এক জোট হওয়ার চেষ্টা করছে। আশা করা হচ্ছে, ক্ষমতায় অংশ না নিয়েও এই জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন করতে পারে ইসরায়েলের আরব দলগুলো, বিশেষ করে, ইউনাইটেড আরব লিস্ট। পার্লামেন্টে এই দলের চারটি আসন রয়েছে।

তবে উগ্র ডানপন্থি নীতির কারণে ইসরায়েলের আরবরা নাফতালিকে পছন্দ না করায় এটি একটি ‘ভঙ্গুর’ জোট হতে পারে বলে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago