সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, ইলিশ শূন্য চাঁদপুর
চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর গত ১ মে থেকে মাছ ধরা শুরু হলেও নদীতে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। গত এক মাস ধরে অধিকাংশ জেলে নদীতে নেমে হতাশ হয়ে ফিরছেন।
নতুন করে গত ২০ মে থেকে সাগরেও ৬৫ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ফলে, প্রায় ইলিশ শূন্য হয়ে পড়েছে চাঁদপুর।
গতকাল রোববার দুপুরে শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বড়স্টেশন মাছঘাট এমনই অবস্থা দেখা যায়।
তবে মৎস্য বিজ্ঞানীরা এর নানা কারণ উল্লেখ করে এই সময়কে ডাল সিজন বলে ধরে নিচ্ছেন।
সরেজমিন চাঁদপুর মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের জন্য ঘাটে অধিকাংশ আড়তদাররা বসে রয়েছেন। আড়তের পাশে বসে কিছু খুচরা ব্যবসায়ী অল্প কিছু ইলিশ বিক্রি করলেও পুরো মাছঘাট যেন ইলিশ শূন্য।
অলস সময় কাটাচ্ছেন চাঁদপুর মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীসহ মৎস্য শ্রমিকরা। এ অবস্থার কারণ হিসেবে একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কমে যাওয়ায় এখানকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী সাগরের ইলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় চাঁদপুরের এই মাছঘাট এখন প্রায় ইলিশ শূন্য হয়ে পড়েছে।
খুচরা ও পাইকারি ক্রেতারাও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মানিক জমাদার বলেন, ‘ইলিশের এখনও পুরোপুরি মৌসুম শুরু হয়নি। তবুও এই সময় ভোলা, বরিশাল ও নোয়াখালীসহ আশেপাশের জেলা থেকে অল্প কিছু ইলিশ আসছে এই বাজারে। এর মধ্যে এবার সাগরের ইলিশ মাত্র চার থেকে পাঁচ দিন পাওয়া গেছে। তবে কয়েকদিন ধরে কোনো ইলিশই আসছে না। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ নেই বললেই চলে।’
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে ইলিশের ডাল সিজন চলছে। এছাড়া সাগরেও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে প্রথমত পানি নেই। চর পড়ে ইলিশ চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নদী দূষণ, নদীতে ব্যাপক আকারে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলনের কারণে ইলিশের স্বাভাবিক চলাচল ও খাবার সংকট তৈরি হওয়া ইলিশ কমে যাওয়ার মূল কারণ।’
Comments