ক্লিনিক মালিকের অপচিকিৎসায় পা হারালেন টিটন, থানায় জিডি
ভুল চিকিৎসা দেওয়ায় পা কেটে ফেলতে হয়েছে এমন অভিযোগ এনে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ফাতেমা ক্লিনিকের মালিকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক ব্যক্তি।
আজ সোমবার সকালে আলমডাঙ্গার পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে টিটন হোসেন আলমডাঙ্গা থানায় এ অভিযোগ দায়ের করলে বিকালে এটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
জিডিতে টিটন উল্লেখ করেন, দুই মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার পায়ের হাড় ভেঙে যায়। তাকে আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেসময় ক্লিনিক মালিক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু পেশায় চিকিৎসক না হয়েও তিনি টিটনের পুরো পা ব্যান্ডেজ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তিনদিন পর ক্লিনিকে চিকিৎসক এলে অপারেশন করিয়ে দেবেন বলে জানান।
বাড়ি গিয়ে পায়ে যন্ত্রণা শুরু হলে দুই দিন পর টিটনকে আবার ফাতেমা ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর পরিস্থিতি গুরুতর দেখে ক্লিনিক মালিক মঞ্জু তাকে রাজশাহী গিয়ে বড় চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন করাতে বলেন।
কিছু করার নেই ভেবে টিটন ওইদিনই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসকরা ব্যান্ডেজ খুলে দেখেন তার পায়ের মাংস পচে গেছে। চিকিৎসকরা কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে তার পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন।
তবে প্রথমেই ভেঙে যাওয়া পা ভালোভাবে ড্রেসিং করে ব্যান্ডেজ করা হলে এমনটা ঘটতো না বলে জানান তারা।
রাজশাহী থেকে বাড়ি ফিরে এ ঘটনা ক্লিনিক মালিককে জানালে তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে টিটনকে আজীবন সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। তবে বিষয়টি প্রতিশ্রুতি পর্যন্তই থেকে যায়।
কারণ একপর্যায়ে ক্লিনিক মালিক মঞ্জু জানিয়ে দেন যে, টিটনকে তিনি কোনো চিকিৎসা সহায়তা দিতে পারবেন না। ফলে টিটন গত ১৭ এপ্রিল ওই ক্লিনিকে উপস্থিত হন। এসময় তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং এতে কাজ না হলে পরে ক্ষিপ্ত হয়ে টিটনকে তাড়িয়ে দেন মঞ্জু। এ ছাড়াও, আইনগত ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলবেন বলেও তিনি টিটনকে জানিয়ে দেন।
অসহায় টিটন বাড়ি ফিরে যান। পরে তার আত্মীয়স্বজনরা সমবেত হলে তিনি সাহস পান এবং থানায় জিডি করেন।
এদিকে, থানায় জিডির খবর পেয়ে ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক মঞ্জু পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। বিকাল থেকে ক্লিনিকটিও বন্ধ রয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর অভিযোগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্লিনিক মালিক মঞ্জুকে আটকের চেষ্টা চলছে।’
Comments