করোনার প্রভাবে ভারতের অর্থনীতি ৭.৩ শতাংশ সংকুচিত

ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস থেকে নেওয়া

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারতের অর্থনীতি দ্রুততম এক দশমিক ছয় শতাংশ হারে বাড়ছিল। যদিও ২০২০-২১ অর্থবছর শেষ হয়েছে সার্বিক সাত দশমিক তিন শতাংশ পতনের মধ্য দিয়ে।

দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের অনুমিত হিসাবে, অর্থনীতি সংকোচনের এই হার ধরা হয়েছিল আট শতাংশ।

আজ মঙ্গলবার ভারতের গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রথম দুটি প্রান্তিকে। গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে আরোপিত ৬৮ দিনের কঠোর লকডাউনের প্রভাবে প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ ১ মার্চ পর্যন্ত শুরুর তিন মাস ও জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত পরবর্তী তিন মাসে অর্থনীতির সংকোচন হয় ২৪ দশমিক চার শতাংশ।

অব্যাহত বিধিনিষেধের কারণে ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি সংকুচিত হয় সাত দশমিক চার শতাংশ। তবে ১ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় প্রবেশ করে শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়।

দ্বিতীয় ও তৃতীয়- দুই প্রান্তিকেই মানুষ বুঝেশুনে কেনাকাটা করেছন। আর প্রথম প্রান্তিকে নিতান্তই প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া কিছু কেনেননি।

চতুর্থ প্রান্তিকেও সংকোচনের এই ধারা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। পাশাপাশি নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কারণে উন্নতির একটা সম্ভাবনাও ছিল।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এপ্রিলে ভারতের আট কোটি শিল্প কারখানার সূচক ছিল ১২৬ দশমিক সাত। বিগত বছরগুলোতে যা ৫৬ শতাংশ হারে বাড়ছিল। কিন্তু মার্চে এই সূচক ছিল ১৪৯ দশমিক দুই। অর্থাৎ সংকোচনের হার ১৫ দশমিক এক শতাংশ।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভেতর এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের পুরোটা লকডাউন চলেছে। জুনের প্রথম ভাগ পর্যন্ত যা ভারতের বিভিন্ন অংশে কার্যকর থাকতে পারে। সুতরাং নতুন ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুর প্রান্তিকে আগের ধারাই অব্যাহত থাকবে।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া পুরো অর্থবছরে ১০ দশমিক পাঁচ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে। যার অর্থ, প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হতে হবে ২৬ দশমিক দুই শতাংশ, দ্বিতীয় প্রান্তিকে আট দশমিক তিন শতাংশ, তৃতীয় প্রান্তিকে পাঁচ দশমিক চার শতাংশ এবং চতুর্থ প্রান্তিকে ছয় দশমিক দুই শতাংশ।

এটা স্পষ্ট যে, প্রথম প্রান্তিকে অবশ্যই ২৬ দশমিক দুই শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে না। সেই সঙ্গে এটাও পরিষ্কার হয়েছে যে, মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের যে প্রভাব চলছে তা কেবল শুরু। সম্ভবত দ্বিতীয় প্রান্তিকেও এই প্রভাব থাকবে।

আর সুপ্রিম কোর্টের কাছে দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুসারে দৈনিক ৭০ লাখ ২৫ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যদি দেশের ১৮ বছরের ওপরের সবাইকে টিকা দেওয়ার কাজ শেষও হয়, তাহলেও আগামী অক্টোবরে তৃতীয় প্রান্তিকের শুরুতে স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু হবে না।

বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদ এখনও ভারতের নতুন অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী ডাবল ডিজিটের ঘরে থাকার প্রত্যাশা করছেন। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর আগে ব্লুমবার্গ নিউজ ১০ দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলেছিল। এখন তারা ১০ শতাংশের কথা বলছে।

অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, এর পেছনে দুটি কারণ আছে। রাজ্য পর্যায়ে লকডাউনের কারণে উৎপাদন কর্মকাণ্ড সেভাবে কার্যকর হয়নি। আর কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনৈতিক ক্ষতির চেয়ে বেশি মানবিক ক্ষতির কারণ হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Interim govt must not be allowed to fail: Tarique addresses BNP rally

Thousands join BNP rally from Nayapaltan to Manik Mia Avenue

3h ago