পটুয়াখালী

ঘুর্ণিঝড়ে ভেসে গেছে ৫৫ কোটি টাকার মাছ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারের পানিতে পটুয়াখালীতে প্রায় ছয় হাজার পুকুর ও এক হাজার ৬৮১টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে মাছ চাষিদের অন্তত ৫৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পটুয়াখালীতে প্রায় ছয় হাজার পুকুর ও এক হাজার ৬৮১টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। ছবি: সোহরাব হোসেন

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারের পানিতে পটুয়াখালীতে প্রায় ছয় হাজার পুকুর ও এক হাজার ৬৮১টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে মাছ চাষিদের অন্তত ৫৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। 

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ আজ মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের পানিতে পুকুর ও ঘের প্লাবিত হওয়ায় মাছ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।'

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারে পটুয়াখালীর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, যা গত বছরের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের চেয়েও বেশি। 

এতে জেলার সাগর সংলগ্ন তিন উপজেলা কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী ও গলাচিপার বিস্তীর্ণ এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে এবং পুকুর মাছের ঘেরও প্লাবিত হয়েছে।

জেলা মৎস্য অফিস জানায়, কলাপাড়া উপজেলায় এক হাজার ৭৪২টি পুকুর ও ৬০৫টি ঘের, দশমিনায় এক হাজার ১৬৭টি পুকুর ও ৬৩টি ঘের, বাউফলে এক হাজার ১৪২টি পুকুর ও ১২৩টি ঘের, সদর উপজেলায় ৭৫৫টি পুকুর, রাঙ্গাবালীতে ৩০৮টি পুকুর ও ৮৫০টি ঘের, মির্জাগঞ্জে ১৮৫টি পুকুর ও ৪০টি ঘের, গলাচিপায় ১০৫টি পুকুর, দুমকিতে ৫০০টি পুকুর প্লাবিত হয়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা গ্রামের মাছের ঘের মালিক দবির গাজী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর ঋণ নিয়ে মাছের ঘের করেছি। ঘেরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ছয় লাখ টাকার মাছ ছিল। কিন্তু ইয়াসের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে।'

চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জানান, চালিতাবুনিয়া একটি ভাঙন কবলিত ও বেড়িবাঁধ হীন এলাকা। অনেক আগে এ এলাকার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধ মেরামত বা সংস্কার না করায় জোয়ারের পানিতে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। 

মাছ চাষিরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, তাদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।

চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চরআন্ডার বেড়িবাঁধটি দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় আছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হলেই পানি প্রবেশ করে লোকালয় তলিয়ে যায়। মানুষ পানি বন্দী হয়ে থাকে।

যোগাযোগ করা হলে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি লোকালয় প্রবেশ করেছে। এতে অনেক পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গিয়ে মাছ ভেসে গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago