স্মৃতির খাতা খুলে বসে আছি: কুমার বিশ্বজিৎ
‘জন্মদিনের সকাল থেকেই বারবার মনে হচ্ছে জীবন থেকে আরেকটি বছর চলে গেল। কিন্ত কিছুই শিখতে পারলাম না। আরও কতকিছু জানার বাকী রয়ে গেছে। আমার খুব মনে পড়ছে গানের য্যাত্রাপথে যাদের সঙ্গে চলতে জীবনের অনেককিছু ভাগাভাগি করেছি, সেই প্রিয় নামগুলো। লাকী আখন্দ, আলাউদ্দিন আলী, শেখ ইশতিয়াক ,এন্ড্রু কিশোর, খালিদ হাসান মিলু, আইয়ুব বাচ্চু, আলী আকবর রুপু, ফরিদ আহমেদ। কত স্মৃতির আকাশ রচিত হয়েছে নামগুলোর সঙ্গে। স্মতির খাতা খুলে বসে আছি আজকের দিনে। কীভাবে শোধ করব এই ঋণ।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজের জন্মদিনে কথাগুলো দ্য ডেইলি স্টারকে বলছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ।
১৯৬৩ সালের ১ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জন্মগ্রহণ করেন কুমার বিশ্বজিৎ। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি প্রবল আগ্রহ। সেই আগ্রহটাকে স্বপ্ন-সাধনা বানিয়ে সংগীত জগতে খ্যাতিমান হয়ে উঠেন। ১৯৭৭ সালে একটি রেডিও অনুষ্ঠানে প্রথম গান গাওয়ার মাধ্যমে সুরের ভুবনে যাত্রা শুরু করেন। এরপর ‘রিদম ৭৭’ নামে একটি ব্যান্ডে দুই বছর গান করেন। ১৯৭৯ সালে ‘ফিলিংস’ নামে আরেকটি ব্যান্ড গঠন করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে কুমার বিশ্বজিৎ প্রথম গান করেছিলেন ১৯৮০ সালের দিকে। তবে ‘শিউলিমালা’ নামের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ১৯৮২ সালে ‘তোরে পুতুলের মতো করে’ গানটি দিয়ে নাম ছড়িয়ে পড়ে। এই গানটা তার সংগীত জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। তবে শ্রোতাদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’ গানটি। প্রথম প্লেব্যাক করেন ১৯৮২ সালে আলাউদ্দিন আলীর সুর ও সংগীতে ‘ইন্সপেক্টর’ সিনেমায়। কুমার বিশ্বজিৎ দুইবার শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। ৩০টি একক অ্যালবাম, অসংখ্য মিশ্র অ্যালবাম ও সিনেমায় গানে প্লেব্যাক করেছেন।
কুমার বিশ্বজিৎ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাংলা সংগীতকে আরও অনেক বেশি সমৃদ্ধ করার আছে। আমি কখনো টাকার পিছে ছুটিনি। গান হিট করার পেছনে ছুটিনি। আমার বরাবরই চেষ্টা, আমার দৃষ্টিভঙ্গি এবং আদর্শই ছিল আমার কাছে সবকিছু। কখনো গানকে ব্যবসায়িকভাবে দেখিনি। আমার যা কিছু অর্জন সব কিছুই সংগীত থেকে। আমার মনে হয়, সৃষ্টিশীল মানুষ যদি আরও দুইটা জীবন পেত তা হলে অনেক কিছু করতে পারত। এই কথাগুলো আজ বারবার শুধু মনে হচ্ছে।’
চিরসবুজ কণ্ঠশিল্পী আশির দশক থেকে এখন অব্দি গান করে যাচ্ছেন। তার গাওয়া অসংখ্য গান বাঙালির প্রাণের অনুষঙ্গ। কুমার বিশ্বজিতের শ্রোতাপ্রিয় ১০ গান:
তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে
যেখানে সীমান্ত তোমার
তোরে পুতুলের মতো করে করে সাজিয়ে
ও ডাক্তার
একটা চাঁদ ছাড়া রাত
চন্দনা গো রাগ করোনা
বহদিন পর হয়েছি মুখোমুখি তোমার
কান্নার রোল উঠবে একদিন
তুমি যদি বলো পদ্মা মেঘনা
চতুর্দোলায় চড়ে দেখো
Comments