ফাইজারের টিকা প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ৭ জুনের পরে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

ফাইজার ও বায়ো এন টেকের টিকা প্রয়োগের বিষয়ে ৭ জুনের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম।
ফাইল ছবি

ফাইজার ও বায়ো এন টেকের টিকা প্রয়োগের বিষয়ে ৭ জুনের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম।

আজ বুধবার দুপুরে ভার্চুয়াল বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ফাইজার ও বায়ো এন টেকের এক লাখের বেশি ডোজের টিকা ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। সেটি ঢাকাতেই সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এটি একটি বিশেষ ধরনের টিকা। মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এটিকে সংরক্ষণ করতে হয়। আমরা আশা করছি, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই টিকা প্রদান শুরু হবে। কোথায় দেওয়া হবে, কাদের দেওয়া হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। যাতে এই টিকা কোনো অবস্থাতেই নষ্ট না হয়। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হবে, কতজনকে দেওয়া হবে তা আমরা জানিয়ে দেবো। যেহেতু টিকার পরিমাণ অত্যন্ত কম, যারা ইতোমধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের মধ্যে থেকেই টিকাটি দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফাইজারের টিকা কবে থেকে দেওয়া শুরু হবে তারিখটি আমরা এখনো নির্ধারণ করিনি। ৭ তারিখের পরে, প্রশিক্ষণের যে অংশটুকু চলমান আছে— আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, সেটি শেষ হলে তারিখটি আমরা জানিয়ে দেবো। অনেকগুলো হাসপাতাল বিবেচনায় আছে, ভ্যাকসিনটি যেখানে রাখা হয়েছে সেখান থেকে দূরত্ব, লোকবল এবং অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে এটি চূড়ান্ত করবো।’

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে যে গণ টিকাদান কর্মসূচি অত্যন্ত সুন্দরভাবে চলেছে। টিকার সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে, না পাওয়ার কারণে আমরা প্রথম ডোজের টিকাদান বন্ধ রেখেছি। ইতোমধ্যে চীন থেকে উপহার স্মরূপ যে টিকাটি এসেছিল সেটি যারা চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত আছেন, মেডিকেল কলেজ স্টুডেন্ট-নার্সিং স্টুডেন্ট তাদের মধ্যে ৫০১ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে বাকি যারা আছেন তাদেরও টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসতে পারবো।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ থেকে কেউ বাদ পড়েননি। তারা অপেক্ষমাণ আছেন। আমরা জানি, এই অপেক্ষার সময় অত্যন্ত দীর্ঘ। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সংগ্রহে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা জেনেছি, ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহের পরে টিকাটি দেওয়া যায়। কাজেই আমাদের কাছে এই সময় আছে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এই সময়ের মধ্যে টিকা সংগ্রহ করতে পারবে এবং আমরা যথা সময়ে টিকা দিয়ে দিতে পারবো।’

‘বর্ষা প্রায় চলে এসেছে। এ সময় আমাদের নদ-নদীতে পানিতে ডুবে আমাদের ছোট শিশুরা অকাল মৃত্যু বরণ করে। বাংলাদেশে অসংক্রমিত রোগে মৃত্যুর যে বার্ডেন আছে, তার একটি হলো পানিতে ডুবে মারা যাওয়া। এক থেকে চার বছর বয়সী শিশুরা সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। মৃত্যুর ক্ষেত্রে এক থেকে চার বছর বয়সী এক লাখ শিশুর মধ্যে ৮৬ দশমিক তিন এবং এক থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের হিসাব করলে দাঁড়ায় ৭৮ দশমিক ছয়। গত কিছু দিন ধরে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যাবে, অন্তত ৭৯টি মৃত্যু হয়েছে। যার কোনোটি কাম্য নয়। সচেতনতা পারে এই মৃত্যু প্রতিরোধ করতে’— বলেন নাজমুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি বাংলাদেশে সর্প দংশন একটি অন্যতম মৃত্যুর কারণ। এর কারণে আমাদের দেশে প্রতি বছর বহু সংখ্যক মানুষ মারা যায়। অ্যান্টি স্নেক ভেনম যেটি সরকার বিনা পয়সায় সরবরাহ করে, সেটি আমাদের যথেষ্ট মজুদ আছে। সরবরাহ করা আছে। তবে সেটি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে ব্যবহার করা যায় না বলে এর সংগ্রহ ও সরবরাহের মাঝখানে কখনো কখনো এক ধরনের গ্যাপ তৈরি হয়। আমাদের যারা জেলা ব্যবস্থাপক আছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। সর্প দংশনের পরে টোটকা চিকিৎসা না নিয়ে নিকটস্থ হাসপাতালে গেলে অকাল মৃত্যু শতভাগ ক্ষেত্রে প্রতিহত করা সম্ভব। করোনাকালে কোভিড চিকিৎসা করতে গিয়ে নন-কোভিড রোগীদের অবহেলা করা হয়েছে বা তাদের অসুবিধা হয়েছে এমন আলোচনা এসেছে। যখন একটি জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটা মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের সবাইকে কম-বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। সেটাকে আপনারা ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago