চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী এলাকায় লকডাউন

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী কার্পাসডাঙ্গা এলাকায় লকডাউন দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
লকডাউন দেওয়া এলাকাগুলো হলো--কার্পাসডাঙ্গা-ঠাকুরপুর সড়ক, কার্পাসডাঙ্গা-কুতুবপুর সড়ক, কার্পাসডাঙ্গা মিশনপাড়া সড়ক, তালসারি মোড়, নাটুদহের গোচিয়ারপাড়া মোড় ও ফকিরপাড়া মোড়।
ওইসব এলাকায় বাঁশ ও গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান জানান, দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে সম্প্রতি ভারত ফেরতদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ১১ জনের মধ্যে সাত জনের বাড়ি ওই এলাকাগুলোতে। তারা চুয়াডাঙ্গা শহরে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
লকডাউন দেওয়া এলাকাগুলোর সঙ্গে ভারতের সব ধরণের ব্যবসায়িক কার্যক্রম এক মাসের জন্য স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দামুড়হুদা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী হরিরামপুর ও শিবনগর গ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েকদিনে বেড়ে গেছে। একইসঙ্গে করোনার উপসর্গ থাকলেও তা পরীক্ষা করাতে মানুষ অনীহা প্রকাশ করে আসছিল। তাই আজ সকাল থেকে তাদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে।'
তিনি জানান, আজ দুপুর পর্যন্ত উপজেলায় ১১৮ জনের করোনা পরীক্ষা করে ১২ নারীসহ ২৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আছে কিনা, তা পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা আইইডিসিআর এ পাঠানো হয়েছে।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আগামী দুয়েক দিনের মধ্যেই সীমান্তবর্তী প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডভিত্তিক করোনা বিস্তার প্রতিরোধ সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শতভাগ হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হবে। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তি ও তার পরিবারকে খাদ্য, ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা পরিষদ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৪ শয্যা বিশিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া উপজেলার ঝাঁঝাঁডাঙ্গা, নাস্তিপুর, কামারপাড়া মোড়, বড়বলদিয়া মোড়, ফুলবাড়ী, চাকুলিয়া, ঠাকুরপুর, কুতুবপুর, মুন্সীপুর, জাহাজপোতা, শিবনগর, হরিরামপুর, জগন্নাথপুর বাজারসহ সীমান্তবর্তী এলাকা এবং করোনা সংক্রমণের হার বেশি যেসব এলাকায় সেখানে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের ব্যবস্থাও করা হবে।
সীমান্ত এলাকায় ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
Comments