তরুণ মূসার ঝড় ম্লান করে মোহামেডানকে জেতালেন ইরফান
প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণে সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদের মতো বড় নাম। কিন্তু মাত্র দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা তরুণ আব্বাস মূসা ব্যাট করলেন তেড়েফুঁড়ে। দারুণ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পেলেন ফিফটি। ইনিংস টেনে ফিফটি করলেন তাসামুল হকও। চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পাওয়ার সাকিবকে প্রথম বলে ফিরিয়ে অঘটনের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব। মাহমুদুল হাসান লিমন, ইরফান শুক্কুর দের ব্যাটে সেই সম্ভাবনা নিভেছে দপ করে।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রাতের ম্যাচে পারটেক্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির ম্যাচে আগে ব্যাট করে দুই ফিফটিতে ১৫৭ করেছিল পারটেক্স। মন্থর উইকেটে এই রান ছিল বেশ জুতসই। কিন্তু অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপ দিয়ে এই রান আটকানো যায়নি। ১৪ বল আগেই জয় নিশ্চিত হয়েছে তাদের।
দলকে ম্যাচ জিতিয়ে ২৯ বলে ৫২ করে অপরাজিত ছিলেন ইরফান শুক্কুর।
১৫৮ রানের লক্ষ্যে ইতিবাচক শুরু আনেন পারভেজ হোসেন ইমন। দুই ছক্কায় থিতু হওয়া ইনিংসটা যদিও টানতে পারেননি। ১১ বলে ১৭ করে তাসামুল হকের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। ঠিক পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান সাকিব। তাসামুলের বলটা শার্প টার্ন করেছিল। মোহামেডান অধিনায়ক সেটা বুঝতেই পারেননি।
২৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর শামসুর রহমানকে নিয়ে জুটি পান মাহমুদুল। তৃতীয় উইকেটে তারা আনেন ৪৫ রান। মাহমুদুল ছিলেন সড়গড়। রানের চাকা একদম পড়তে দেননি তিনি। ৪ চার ২ ছক্কায় ২৬ বলে ৩৮ করেছেন তিনি। তার আউটের আগে ১৬ বলে ১৯ বলে ফেরেন শুভ। পর পর দুই উইকেট তুলে ফের খেলায় ফিরেছিল পারটেক্স।
পঞ্চম উইকেটে নাদিফ চৌধুরীকে নিয়ে আর কোন সুযোগ দেননি ইরফান। দুজনের জুটিতে আসে অবিচ্ছিন্ন ৮০ রান।
অনভিজ্ঞতায় ভরা পারটেক্স এই দুজনকে থামানোর কোন উপায় খুঁজে পায়নি। ৫ চারের সঙ্গে ২ ছক্কা মারেন ইরফান। ১টি করে চার-ছক্কায় নাদিফ করেন ২৩ বলে ২৭ রান। বোলারদেরও ঠিকমতো ব্যাবহার করতে পারেনি পারটেক্স। প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান দিলেও আর বল পাননি জয়নুল ইসলাম।
এর আগে পারটেক্সের ইনিংস ছিল তরুণ মূসার দ্যুতিতে ভরপুর। ওপেন করতে নেমে আউট হন ১৫তম ওভারে। তার আগে ৫টি করে চার-ছক্কায় করে যান ৬৪ রানের বিনোদনদায়ী ব্যাটিং।
আরেক ওপেনার সায়েম আলম শুরুতে ফিরে যাওয়ার পর তাসামুলকে নিয়ে বড় জুটি পান মূসা। তাদের জুটিতে আসে ৯৫ রান। তাসামুল মন দিয়েছিলেন এক প্রান্ত ধরে রাখায়, মূসা খেলেছেন ডাকাবুকো ক্রিকেট।
তাসকিনকে মেরেছেন দুই ছয়, আবু জায়েদ রাহিকে মেরেছেন একটি। রান বের করেছেন সাকিবের বলে। প্রথম ওভারে মেডেন উইকেট পেলেও পরে ৪ ওভার শেষে সাকিব দেন ৩১ রান। সুইপ, ইনসাইড আউটে তাসামুল সাকিবের এক ওভার থেকে নেন ১৫ রান।
৫ ওভার আগে মূসা ফিরে গেলেও তাসামুল আউট হয়েছেন একদম ইনিংসের শেষ বলে। দলকে দেড়শো পার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাদের বোলিং-ফিল্ডিং হয়েছে মলিন। হাত ফসকে ক্যাচ পড়েছে, সহজ বলও ফিল্ডারদের হাত গলে বেরিয়ে গেছে বাউন্ডারিতে।
লিগে এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেল সাকিবের মোহামেডান। টানা দুই হার পারটেক্সের।
Comments