এনআইডি জালিয়াতি: কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মচারী কারাগারে

কুষ্টিয়ায় আলোচিত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির মামলায় জেলা নির্বাচন অফিসের এক কর্মচারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ শনিবার সকালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনিসুর রহমান আনিসকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাকে কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন।
সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া সিআইডি’র একটি দল আনিসকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আনিস কয়েক দফায় অতিরিক্ত সময় নেওয়ায় জবানবন্দি রেকর্ডে সন্ধ্যা হয়ে যায়।
চলতি বছরের ৪ মার্চ কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় জেলা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে এনআইডি কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। সে সময় জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন আনিসুর রহমান আনিস। সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত করতে গিয়ে জালিয়াতিতে আনিসের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় সিআইডি।
একই দিন জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় আরেকটি মামলাটি দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় পাঁচ জনকে আসামি করা হয়। এরা হলেন— ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব নওয়াবুল ইসলাম, ফরিদপুরের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস ও কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিস সহকারী জি এম সাদিক সত্যবাদী। জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার সময় তারা সবাই কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন।
এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর প্রথমে ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জালিয়াতির মূল পরিকল্পনাকারী ব্যবসায়ী মহিবুল। ওই মামলার নথিভুক্ত আসামি যুবলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান সুজনসহ সাত জন বর্তমানে কারাগারে আছেন।
সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডের বাসিন্দা এম এম এ ওয়াদুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম ও তথ্য দিয়ে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়। এরপর ভুয়া মালিক সাজিয়ে ওয়াদুদের শত কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়া হয়। এরপর বিষয়টি ধরা পড়লে জালিয়াতির অভিযোগে তিনটি মামলা হয়।
আবুল হোসেন আরও জানিয়েছেন, এই আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনও পৃথক মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলাটি চলমান রয়েছে।
Comments