২ শতাংশ পোশাকশ্রমিক করোনার টিকা নিয়েছে: সানেম, এমএফওর জরিপ

workers-1.jpg
তৈরি পোশাক শ্রমিক। ছবি: স্টার

কোভিড-১৯ সংকট চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের জীবনে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা বোঝার জন্য সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও) যৌথভাবে ধারাবাহিক জরিপ পরিচালনা করছে। সম্প্রতি তাদের এক জরিপে উঠে এসেছে দুই শতাংশ পোশাক শ্রমিক করোনার টিকা নিয়েছেন।

আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সানেম।

এতে বলা হয়, ১২৮৫ জন পোশাক শ্রমিকের একটি নির্বাচিত পুল থেকে গত ২৩ এপ্রিল, ২০২১ এ ফোনে পরিচালিত জরিপের মাধ্যমে তথ্য থেকে জানা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী মাত্র দুই শতাংশ শ্রমিক কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে ৬৯ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, সুযোগ থাকলে তারা ভ্যাকসিন নিতে চান।

এছাড়াও ভ্যাকসিন কর্মসূচির জন্য উপযুক্ত কিনা সেই প্রশ্নে জরিপে ৩৪ শতাংশ জানিয়েছেন যে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না এবং ২৩ শতাংশ টিকা নেয়ার কোনো উপকারিতা আছে বলে মনে করেন না।

সানেম জানায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী তিন-চতুর্থাংশের বেশি উত্তরদাতা নারী শ্রমিক, যা সামগ্রিকভাবে এই খাতের বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন বলে জানানো হয়।

“গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ” প্রকল্পের অধীনে সানেম ও এমএফও ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে বাংলাদেশের মূল পাঁচটি শিল্প এলাকায় (চট্টগ্রাম, ঢাকা শহর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, এবং সাভার) কর্মরত পোশাক শ্রমিকদের কর্মসংস্থান, আয়, খাদ্য নিরাপত্তা, মজুরির আধুনিকীকরণ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রতি মাসে তথ্য সংগ্রহ করছে।

এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নিয়মিত ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে তথ্যভিত্তিক নীতি গ্রহণ ও বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোকে শ্রমিকমুখী উদ্যোগ নিতে সহায়তা করা।

সানেম জানায়, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর থেকে বাংলাদেশে আরেক দফা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই লকডাউনের সময়কাল জাতীয় ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পেইনের সফলতা ও কোভিডের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে।

জরিপের এই তথ্যগুলি বোঝা যায় কোভিড-১৯ এর টিকাদানের ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য শ্রমিকদের কাছে নেই। ভ্যাক্সিন নিতে চান এমন শ্রমিকদের মধ্যে ২২ শতাংশ এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেন বলে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক কারণ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে কর্মরত লাখো শ্রমিকের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে। তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন, রপ্তানি ও সামগ্রিকভাবে পুরো অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কারখানার মালিকপক্ষ, সরকার, নীতিনির্ধারক ও অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলোকে সম্মিলিতভাবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও  জীবনের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

লকডাউনে যাতায়াতে পরিবর্তন আসেনি

দেশব্যাপী লকডাউনের মধ্যেও তৈরি পোশাক খাতের কারখানাগুলোকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখার অনুমতি দেয়া হয়। যদিও পর্যাপ্ত গণপরিবহনের অনুপস্থিতিতে অনেক পোশাক শ্রমিককেই বিকল্প উপায়ে কর্মস্থলে যাতায়াত করতে হয়েছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯২ উত্তরদাতা জানিয়েছেন লকডাউনে তাদের যাতায়াতের মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন আসেনি, যা থেকে বোঝা যায় অধিকাংশ শ্রমিক সাধারণত পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যান। ৪ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারা কারখানার পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করেছেন। এর মাধ্যমে বোঝা যায় শ্রমিক পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত যানবাহনের ব্যবস্থার যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago